আভা ডেস্কঃ মামলার কাগজপত্র জালিয়াতি করে হাইকোর্ট থেকে জামিন করানোর অভিযোগ প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা মামলার এজাহার জব্দ তালিকা ও অভিযোগপত্রের (চার্জশিট) নকল তৈরি করে হাইকোর্ট থেকে আসামিদের জামিন করিয়ে দিত। চক্রটি অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে এভাবে জামিন করিয়েছে বলে তথ্য পেয়েছে সিআইডি।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডির সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
প্রতারক চক্রের মূল হোতা দেলোয়ার হোসেন ও তার অপর দুই সহযোগী এবিএম রায়হান ও শামীম রেজাকে মঙ্গলবার রংপুরের পীরগাছা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় সিআইডি।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান বলেন, এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে জানা যায়, ২০১৪ সালের অস্ত্র উদ্ধার সংক্রান্ত ঘটনায় রাজবাড়ী থানায় একটি মামলা হয়। পূর্ব বাংলার চরমপন্থী দলের নেতা মো. ইয়ার আলীকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে রাজবাড়ী থানা পুলিশ। পরে তার বিরুদ্ধে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইন ( সংশোধনী ২০০২) এর ১৯/১৯৮ ধারা মতে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, পরে আসামি নিম্ন আদালতে জামিন না পাওয়ায় প্রতারক চক্র অ্যাডভোকেট ঝর্ণা সাথীর মাধ্যমে মামলার এজাহার, জব্দ তালিকা ও অভিযোগপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে নতুনভাবে তৈরি করে হাইকোর্ট বিভাগে জামিনের আবেদন করে। জামিন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগের আপিল আদালত আসামি মো. ইয়ার আলীকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেয়। পরবর্তী সময়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ মামলার মূল কাগজপত্র যাচাই করতে গেলে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এরপর এ বিষয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন হাইকোর্ট বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার। এতে মামলাটির তদন্তভার পড়ে সিআইডির ওপর। সিআইডি তদন্তে নেমে চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি আসামি অ্যাডভোকেট ঝর্ণা সাথীর সহকারী মো. হারুন ও রশিদকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেয়া তথ্য মতে, এই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছেন, তারা এ পর্যন্ত কাগজপত্র নকল করে ৫০ জনের বেশি আসামিকে জামিন করিয়ে দিয়েছেন। চরমপন্থী দলের নেতা মো. ইয়ার আলীর সাথে প্রতারক চক্রের পাঁচ লাখ টাকার চুক্তি হয় বলেও জানান পুলিশ সুপার।