ওয়াজ মাহফিল নিয়ে সংসদে পাল্টাপাল্টি বিতর্ক

আভা ডেস্কঃ ওয়াজ মাহফিলে সরকার বাধা দিচ্ছে এমন মন্তব্য করে জাতীয় সংসদে তোপের মুখে পড়েছেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে বিএনপি ধর্মের কথা তুলছে বলে এমন অভিযোগে ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় ওয়াজ নিয়ে পাল্টাপাল্টি এই অভিযোগের ঘটনা অধিবেশনে উত্তাপ ছড়ায়।

পয়েন্ট অব অর্ডরে ফ্লোর নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ দাবি করেন, দেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন ধর্মের লোকরা সামাজিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। কিন্তু ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা তাফসির মাহফিল করতে গেলে আপত্তি আসছে। নিষেধাজ্ঞা আসছে। এটা আমাদের মুসলমানদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করছে।

এ সময় সরকারি দলের বেঞ্চ থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা হারুনের কথার প্রতিবাদ জানান।

জবাব দিতে উঠে সাবেক সরকার দলীয় চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ বলেন, বাংলাদেশে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই সমানভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। দেশের সমস্ত জায়গায়, জেলা-উপজেলায়, ইউনিয়ন, গ্রাম পর্যন্ত সমস্ত জায়গায় ওয়াজ মাহফিল হচ্ছে। আল্লাহ-রাসূলের কথা বলা হচ্ছে। শুধুমাত্র জামায়াতী পন্থায় বিভ্রান্তিকর শিক্ষা-দীক্ষা যাতে মানুষ না নেয়, যাতে দেশটাকে জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত না করে- সেক্ষেত্রে আমরা বলে থাকি এটা যেন না হয়।

কিন্তু ইসলামের কোন কার্যকলাপে বাধা সৃষ্টির প্রশ্নই উঠে না। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ দেশটাকে আন্তর্জাতিকভাবে সারা বিশ্বে ইসলাম ধর্মটাকে জঙ্গি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে। আমরা এ দেশটাকে কোনভাবেই জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত হতে দিতে চাই না। আমরা চাই সত্যিকারের ইসলাম, মহানবীর ইসলাম যাতে কার্যকর হয়। ইসলাম আছে, ইসলাম থাকবে, বাংলাদেশে চিরদিন মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষা হবে।

বক্তব্যের শুরুতে হারুনুর রশীদ বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি সংশোধিত সংবিধানের পূর্বে সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসী হবে যাবতীয় কাজের ভিত্তি, এটি নতুন সংশোধিত সংবিধান থেকে উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। অথচ রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম রাখা হয়েছে।

সংবিধানের প্রস্তাবনায় পূর্বের বিষয়টি বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, সেটির পরিবর্তে সংযোজিত হয়েছে দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে, পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার নামে। বিসমিল্লাহির রহমানির রহিমের প্রকৃত অর্থ সংযোজিত হওয়া উচিত।

এরপর তিনি বলেন, ‘আমরা কয়েকদিন থেকে লক্ষ করছি, সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অনেক সদস্য বিভিন্ন বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আজকে বিভিন্ন তাফসির মাহফিলে কোরআন-হাদিসের আলোকে যেসব আলোচনা আসছে, সেগুলোকে আপত্তিজনক, অসংলগ্ন কথাবার্তা বলা হচ্ছে। কোন বিষয়টি? কোরআন ও হাদিস মৌলিক বিষয়। এখানে আমি আমার মতো ব্যাখ্যা দেয়ার সুযোগ নেই।’

পরে হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ফ্লোর নিয়ে বলেন, ‘বিরোধী দলের সদস্য ধর্মের নামে পূর্বের ন্যায় ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করেছেন। তিনি বিসমিল্লাহর ব্যাখ্যা হিসাবে সংসদে গৃহীত সংবিধানের সন্নিবেশিত ব্যাখ্যার অপব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন।’

তিনি বলেন, ‘এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, চিরাচরিত একই রাজনীতি, ধানের শীষে ভোট দিলে বেহেস্তের টিকিট পাওয়া যাবে। নৌকায় ভোট দিলে ইসলাম থাকবে না। নবীর মৃত্যুর পর কোনো হাদিস পৃথিবীতে আসে নাই। বিএনপির জন্মের পর বলা হল ধানের শীষে ভোট দিলে বেহেস্ত পাওয়া যাবে।’

স্বপন বলেন, ‘আগামী ১ তারিখ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এই নির্বাচনে ঢাকার মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য হঠাৎ করে এমন একটি পয়েন্ট উত্থাপন করলেন, যার সঙ্গে সংসদের কার্যক্রমের কোনো সম্পর্ক নেই।’

তিনি বলেন, ‘ওরস, তাফসির এসব বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্য। প্রতিবছর শীতকালে ইসলামি তাফসির মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এটি তাদের আমলে হয়েছে আমাদের আমলেও হচ্ছে। আমরা ওরসে বোমা হামলা করতে দেই নাই। আমরা পবিত্র হযরত শাহজালালের মাজারে বোমা হামলা করতে দেই নাই। আমরা ইসলামকে রক্ষা করার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। সরকার তাফসির মাহফিল, ওরস, বিভিন্ন জলসাকারীদের রাষ্ট্র পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করছে। সুতরাং, হারুন অর রশীদের কথাগুলোকে এক্সপাঞ্জ করার জন্য দাবি করছি।

যুগান্তর

Next Post

সরকারি দলও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, বিরোধী দলও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হওয়া বাঞ্ছনীয়, তথ্যমন্ত্রী ।

শুক্র জানু. ৩১ , ২০২০
আভা ডেস্কঃ তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরও মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তির এ দেশে রাজনীতি করা সমীচীন নয়। তিনি বলেন, দেশকে যদি এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়, তাহলে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকবে। আবার বিরোধী দলও হবে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। সরকারি দলও স্বাধীনতার […]

এই রকম আরও খবর

শিরোনাম

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links