নুর ইসলাম: বর্জ্য ফেলে পানিদূষণ এলাকাবাসী দুর্ভোগ
অযত্ন ও অবহেলায় রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কৈকুড়ী ইউনিয়নের ঐতিহাসিক দেবী চৌধুরানী পুকুরের পানি দূষিত হয়ে গেছে। ফলে স্থানীয় দেবী চৌধুরানী হাটের ক্রেতা-বিক্রেতাসহ এলাকাবাসী দুর্ভোগে পড়েছেন।
দেবী চীেধুরানীর সঞ্চৃতি সংরক্ষণ ও গবেষণা কমিটির আহ্বায়ক এবং ইটাকুমারী শিব চন্দ্র রায় কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বলেন, নদী ও পুকুরের পানিতে বর্জ্য ফেলা পরিবেশ আইনে নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু দেবী চৌধুরানী পুকুরে বাজারের আবর্জনা, পশুর বর্জ্য ও বসতবাড়ির শৌচাগারের ময়লা ফেলে পানি দূষিত করলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
বাজার জামে মসজিদের ইমাম আবদুল ওয়াহেদ জানান, আগে মুসল্লিসহ বাজারে দোকানি ও পাশের লোকজন পুকুরের পানিতে অজু ও গোসল করতেন। এখন গোসল ও অজু করতে ট্যাপের পানি ব্যবহার করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর দেবী চৌধুরানী হাট ৪৫ লাখ টাকা এবং পুকুর ছয় লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। হাটে পশু জবাইখানা আছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অপরিষ্কার ও অপরিছন্ন পরিবেশে পশু জবাই করে রক্ত, নাড়িভুঁড়ি ও বর্জ্য পুকুরের পানিতে ফেলা হচ্ছে। এ ছাড়া বসতবাড়ির শৌচাগারের পাইপলাইন পুকুরের সঙ্গে সংযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
কসাই আবদুর রশিদ জানান, ইজারাদার শুধু টোল নিয়ে যান। কিন্তু বর্জ্য ফেলার কোনো ব্যবস্থা করেন না।
ইজারাদার মেনছের আলী বলেন, জবাইখানা ও শৌচাগার নির্মাণের দায়িত্ব ইজারাদারের নয়, সরকারের।
কৈকুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, পুকুরটি দূষণের হাত থেকে রক্ষার বিষয়ে ইউএনওর সঙ্গে কথা হয়েছে। শিগগিরই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নোটিশ করা হবে। ইউএনও বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অগ্রদূত বীরাঙ্গনা দেবী চৌধুরানী তৎকালীন সময় এলাকার মানুষের পানীয় জলের অভাব দূর করতে প্রায় ১৫ একর জমিতে একটি পুকুর খনন করেন। পুকুরের আশপাশে জনবসতি গড়ে উঠলেও পুকুরের পাড় ঘেঁষে প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার হাট বসে।