আভা ডেস্ক : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, কোটা বাতিল নিয়ে শিক্ষার্থীদের কথা দিয়ে কথা রাখেননি প্রধানমন্ত্রী। এ কথা বাংলাদেশের মানুষ এবং এ প্রজন্ম মনে রাখবে। কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এ অবস্থান মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। সত্যিকার অর্থে যদি প্রধানমন্ত্রী কোটা প্রত্যাহার করে নিতে চাইতেন তাহলে হাইকোর্টের বাধাও অবশ্যই দূর করা যেত। যদি নিয়ত ঠিক থাকত তাহলে এটাই করতেন।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বাধীনতা ফোরাম নামের একটি সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। সংগঠনটির সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে ও সহসভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ বাবুলের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য দেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য খালেদা ইয়াসমীন, জাতীয় দলের সভাপতি সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা সোয়াইব আহমেদ প্রমুখ।
মওদুদ আহমদ বলেন, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়কমন্ত্রী হাইকোর্টে একটা রায়ের কথা বলেছেন। এ ধরনের কোনো রায় আছে বলে আমি মনে করি না। তারপরও যদি এ ধরনের কোনো রায় থাকে তা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ব্যাপারে আছে। তাদের নাতি-নাতনিদের ব্যাপারে আছে বলে আমি মনে করি না। প্রধানমন্ত্রী তার নিজের প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য হাইকোর্টে গিয়ে ওটা সংশোধন করাতে পারেন। যদি সরকার মনে করেন হাইকোর্টের রায়ই হল একমাত্র বাধা, তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল কষ্ট করে রোববার একটু যান, সোমবারে বিষয়টা যদি লিস্টে এনে একটু সংশোধনী করিয়ে নেন, একটু রিভিউ করিয়ে নেন। কত রকমেরই তো পথ আছে। যদি নিয়ত ঠিক থাকত তাহলে এটাই করতেন।
কোটা আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের কঠোর সমালোচনা করেন মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, কেন এ অত্যাচার-নির্যাতন করছেন। কালকে (বৃহস্পতিবার) সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা শুনে মর্মাহত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এটাকেই বলে ফ্যাসিবাদ। কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের বিচার বাংলাদেশের মাটিতে অবশ্যই একদিন হবে।
আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো হবে মন্তব্য করে মওদুদ আহমদ বলেন, রাজনীতি অত্যন্ত গতিশীল। যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে। দেশের মানুষ এখন প্রস্তুত হয়ে গেছে মাঠে নামার জন্য। আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে। উপযুক্ত সময় এলে এমন কর্মসূচি দেয়া হবে, যার ফলে এ ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটবে। সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আদালতের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করে রেখেছে অভিযোগ করে মওদুদ আহমদ বলেন, কৌশল অবলম্বন করে তার জামিনকে আটকে রাখা হয়েছে। হাইকোর্ট চার মাসের জামিন দিয়েছিলেন। একটা দিনের জন্য আমার নেত্রী দিনের মুক্ত আলো দেখতে পারেননি। কেন? ওই যে ম্যাজিস্ট্রেট বসে আছেন। একেবারে নিুতম পর্যায়ের বিচারক, তিনি দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন।
অর্থাৎ দেশের উচ্চতম আদালতের চাইতে ওই ম্যাজিস্ট্রেট অনেক বেশি ক্ষমতাশালী। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বলতে, মান-সš§ান বলতে, ঐতিহ্য বলতে এখন আর কিছু নেই। সব বিলীন হয়ে গেছে।
যুগান্তর