উন্নয়ন মেগা প্রকল্পে, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আলাদা অর্থনৈতিক অঞ্চল: প্রধানমন্ত্রী

আভা ডেস্কঃ কিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের সড়ক, রেলপথ ও নৌ যোগাযোগ উন্নয়ন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ এখন বিদেশি বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় স্থান উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগও চেয়েছেন তিনি।

তিনি বলেছেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে সারা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হয়েছে। এসব অঞ্চলের একটি যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের জন্য আলাদা করে দেয়া যেতে পারে।

মঙ্গলবার সকালে গণভবনে বাংলাদেশ সফররত যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিয়ে এ আহ্বান জানান তিনি।

ব্যবসা এবং বিনিয়োগের পরিবেশ আরও সহজ করতে সম্ভাব্য সর্বোত্তম নীতি কাঠামোর গ্রহণেও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেন সরকার প্রধান।

অভিন্ন মূল্যবোধ ও পারস্পরিক স্বার্থের ভিত্তিতে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বন্ধুত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার এবং অন্যান্য বাণিজ্য সুবিধার মাধ্যমে আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার করা যেতে পারে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে বাংলাদেশ আলোচনায় প্রস্তুত বলেও জানান শেখ হাসিনা।

ভৌত অবকাঠামোর পাশাপাশি, বিনিয়োগ ও ব্যবসা সংক্রান্ত নিয়ম-কানুনগুলোকে সরকার হালনাগাদ ও সহজ করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ নীতি সবচেয়ে সহজ।’

এই সুযোগকে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা গ্রহণ করবে বলেও বিশ্বাস করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, আইসিটি, অবকাঠামো, হালকা প্রকৌশল পণ্য, মোবাইল ফোন এবং ইলেকট্রনিক পণ্য, অটোমোবাইল, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিরামিকের মতো সম্ভাব্য খাতে আরও বিনিয়োগ করবে।’

তিনি বলেন, ‘২০২৬ সালে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে গ্রাজুয়েট করার সুপারিশ করা হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে উন্নীত হতে চাই। আর তাই আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর কাছে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি পরিমাণ বিনিয়োগ আমাদের প্রয়োজন।’

গত পাঁচ বছরে রপ্তানির পরিমাণ ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি বেড়েছে বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘রপ্তানির পরিমাণ ২০১৬-১৭ সালে ৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২১-২২ সালে এসে ৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।’

সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার সরকার আমাদের নাগরিকদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী প্রবৃদ্ধির কৌশল অনুসরণ করছে, যা টেকসই হিসেবে বিশ্ব অর্থনীতিবিদ এবং সংস্থাগুলোর কাছে স্বীকৃতি পেয়েছে।’

জনসংখ্যাগত সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে জোর দিয়েছে বলেও জানান তিনি। এর মধ্য দিয়ে বিনিয়োগকারীরা প্রতিযোগিতামূলক মজুরিতে দক্ষ মানবসম্পদ পাবেন বলে নিশ্চয়তা দেন তিনি।

বাংলাদেশে বাণিজ্যের যে অনুকূল পরিবেশ রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা তা বুঝতে সক্ষম হবেন বলেও বিশ্বাস করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘তৈরি পোশাক, চামড়া, প্লাস্টিক, পাট, আইসিটি, কৃষি প্রক্রিয়াকরণের মতো আরও অনেক কিছুতে বাংলাদেশ এখন অত্যাধুনিক উত্পাদন কারখানা হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃত। এখন আমাদের সময় এবং এই সময়কে কাজে লাগিয়ে অনুকূল বিনিয়োগ ব্যবস্থার সুযোগ তৈরি করুন।’

ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের বোর্ড চেয়ার জে আর প্রাইর, ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের বোর্ড সদস্য এবং বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিজনেস এক্সিকিউটিভরা সভায় বক্তব্য রাখেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, অ্যাম্বাসেডার এট লার্জ এম. জিয়াউদ্দিন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস।

Next Post

চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭.২৫%: বিবিএস

মঙ্গল মে ১০ , ২০২২
আভা ডেস্কঃ চলতি অর্থবছরে দেশের জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। গত মার্চ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক সূচকের বিশ্লেষণ করে জিডিপির সাময়িক হিসাব প্রাক্কলন করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বিবিএস। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভা শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধির এ হিসাব তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links