আভা ডেস্কঃ বগুড়ার সারিয়াকান্দির কামালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি হেদাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে গুদামের তালা ভেঙে ভিজিডির ৫০ বস্তা চাল লুটের অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার রাতের ওই ঘটনার পর তিনি ফোন বন্ধ রেখে আত্মগোপন করেছেন।
রোববার বিকালে পরিষদের সচিব ও গুদামের পাহারায় নিয়োজিত দুই গ্রাম পুলিশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করলে তিনি হাওড়াখালি গ্রামের ওই গুদামে চাল কম পান। তিনি অবশিষ্ট ৪৬ বস্তা চালসহ গুদাম সিলগালা করেন।
এ দিকে ওই চাল বহনকারী ভ্যানচালককে না পেয়ে তার স্ত্রী লিপি খাতুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যায় এ খবর পাঠানোর সময় লুট করা চাল উদ্ধারে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চলছিল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়া এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
কামালপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বর) আমজাদ হোসেন ও এলাকাবাসী জানান, চেয়ারম্যান হেদাইদুল ইসলাম ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। দড়িপাড়া গ্রামে পরিষদ হলেও তিনি ব্যক্তিস্বার্থে তার বাড়ি হাওড়াখালি গ্রামে গুদাম করেন।
সেখান থেকে গত বুধবার ২১৭ জন ভিজিডি কার্ডধারীর মাঝে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের দুই বস্তা করে ৪৩৪ বস্তা চাল বিতরণ করেন। গুদামে ৯৬ বস্তা চাল ছিল। শুক্রবার গভীর রাতে চেয়ারম্যান হেদাইদুল ইসলাম ও তার লোকজন সেখানে আসেন। প্রহরার থাকা গ্রাম পুলিশ রাখাল চন্দ্র ও মন্টু মিয়াকে ভয় দেখিয়ে গুদামের তালা ভেঙে ফেলেন। এরপর ভ্যানে ৫০ বস্তা চাল নিয়ে যান।
তারা আরও জানান, রোববার বিকালে গুদামের তালা ভেঙে ৫০ বস্তা চাল নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি জানাজানি হলে পরিষদের সচিব মোজাহেদুল ইসলাম গ্রাম পুলিশ রাখাল চন্দ্র ও মন্টু মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়াকে অভিযোগ করেন।
এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ট্যাগ অফিসার পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা কাবিল উদ্দিন, খাদ্য কর্মকর্তা শাহান শাহকে সঙ্গে নিয়ে হাওড়াখালি গ্রামে গুদামে গিয়ে ৯৬ বস্তার মধ্যে মাত্র ৪৬ বস্তা চাল পান। গুদাম সিলগালার পর তারা চেয়ারম্যানের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাননি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ।
বাবা-মা জানিয়ে দেন, চেয়ারম্যানের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এরপর চাল চুরির সঙ্গে জড়িত অটোভ্যানচালক মিলন মণ্ডলকে খোঁজ করে তাকে পাওয়া যায়নি। তার অবস্থান জানার জন্য স্ত্রী লিপি খাতুনকে আটক করা হয়।
সারিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মতিয়ার রহমান জানান, কামালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, যুবলীগ সভাপতি হেদাইদুল ইসলাম বিপথগামী হয়েছেন। এর আগেও তার বিরুদ্ধে ভিজিএফের চাল আত্মসাৎ অভিযোগে মামলা হয়েছিল।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়া জানান, সবাই অভিযোগ করছেন, তালা ভেঙে চাল চুরির সঙ্গে চেয়ারম্যান জড়িত। তার ফোন বন্ধ থাকায় তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে তদন্ত ও অভিযান চলছে। সত্যতা পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যুগান্তর
