আভা ডেস্কঃ মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৮০ ভূমিহীন পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে সরকার। বিভিন্ন স্থানে এসব ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বেশকিছু ঘর ভেঙে পড়েছে। নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগে প্রশাসনের ৫ কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকারি ঘর ভেঙ্গে পড়া এলাকার সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিচালকের প্রাথমিক তথ্য মতে প্রশাসনের পাঁচ সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও অবহেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারই ভিত্তিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে তাদের ইতিমধ্যে ওএসডি করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিভাগীয় মামলাসহ আইনি ব্যবস্থা নেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
সূত্র আরও জানায়, সরকারি ঘর নির্মাণকাজে দায়িত্ব পালনকালে অনিয়ম অবহেলার অভিযোগে প্রশাসনের যে পাঁচ কর্মকর্তাকে ইতিমধ্যে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে, তারা হলেন—সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে সাবেক ইউএনও (বর্তমানে উপসচিব) শফিকুল ইসলাম, বরগুনার আমতলীর ইউএনও মো. আসাদুজ্জামান, বগুড়ার শেরপুরের সাবেক ইউএনও মো. লিয়াকত আলী সেখ (বর্তমানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক), মুন্সিগঞ্জ সদরের সাবেক ইউএনও রুবায়েত হায়াত ও মুন্সিগঞ্জ সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ মেজবাহ-উল-সাবেরিন। এদের মধ্যে সিরাজগঞ্জের সাবেক ইউএনও শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার বিকালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম রাইজিংবিডিকে জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিচলক ও সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা তাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক প্রতিবেদন দিয়েছেন। বলতে গেলে একেবারে প্রাথমিক তথ্য। সেটার আলোকে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করে নিয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। প্রমাণিত হলে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া গ্রামে তৈরি করা ২৮টি ঘরের মধ্যে ১টি ঘরের বারান্দা গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে ভেঙে পড়েছে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে বরগুনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া দুর্যোগ সহনশীল ঘরের দেয়াল নির্মাণের কয়েক ঘণ্টা পরই ভেঙে পড়ে।
১৭ এপ্রিল আশ্রয়ণ প্রকল্পের লালমনিরহাটের সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ জলঢাকা এলাকায় হালিমা খাতুনের ঘরের চাল উড়ে যায় এবং বারান্দার তিনটি পিলার ভেঙে পড়ে।
গত ২ জুলাই গোপালগঞ্জে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বরাদ্দ দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প-২–এর প্রথম পর্যায়ের দুটি ঘরের কিছু অংশ ভেঙে পড়েছে। এভাবে বিভিন্নস্থানে সরকারি ঘর ভেঙ্গে পড়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের অনিয়ম-অবহেলার কারণে এসব ঘর ভেঙ্গে পড়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।