আরএমপি’র সহকারী প্রশাসন জুলমাত হাবিবের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দূর্নীতি’র অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত অফিস সহকারী (প্রশাসন) জুলমাত হাবিবের বিরুদ্ধে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ ক্ষমতার অপব্যবহার করে জমি দখল, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে আরএমপি’র কাজ পাইয়ে দেওয়াসহ নানা অনিয়ম দূর্নীতি’র অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে তাঁর অবৈধ সম্পদের বিবরণ দিয়ে দুদকে অভিযোগ হয়েছে। যদিও অভিযোগটি এখনো তদন্তধীন আছে বলে নিশ্চিত করেছেন দুদক রাজশাহী অফিস। অপরদিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সায়েরা খাতুন নামে একজন অবসর প্রাপ্ত সরকারি চাকুরীজীবি তাঁর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। এঘটনায় ২৯ নভেম্বর ২০২০ সালে তৎকালীন পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগও দেন তিনি। লিখিত অভিযোগ দিয়েও আজ অবদি কোনো শুরাহা হয়নি। এখনো হয়রানি ও জমি দখলের পায়তারায় লিপ্ত বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী পরিবার এখনো ছুটে চলেছে থানা পুলিশসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে। কয়েক দফায় কাউন্সিলররা বসেও সমাধান করতে পারেননি বিষয়টি৷ অনেকটা জোরপূর্বক ও ক্ষমতা প্রয়োগ করে একের পর এক হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে।


ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনে জড়িত তিনি অনেক আগে থেকেই। এর আগে ভুক্তভোগী সায়েরা খাতুনের সীমানা প্রাচীর ভেঙে দেন তিনিসহ তার লোকজন। সেসময় জুলমত হাবিব সবার সামনে বলেন, আরএমপি’র লোকজনের জমি নিতে দলিল লাগে না। কোনো ডকুমেন্টস লাগে না।
ভুক্তভোগী সায়েরা খাতুন বলেন, এ মাটি আমার। ১৯৭৮ সাল থেকে বাড়িটি প্রায় ৪০ বছর আগের। যে প্রাচীর ভেঙেছে সেটিও ১২-১৩ বছর পুরোনো। আমার বাসার পেছনে তাদের জমি আছে। জমিটিতে যাওয়ার রাস্তা নেই। রাস্তা না থাকায় আরডিএ প্লান করা আমার জমিটি তারা দখলে নিতে নানা রকম ষড়যন্ত্র করছেন। তারা আমাদের নানাভাবে হয়রানিসহ বাড়ির কাজে বাধা সৃষ্টি করছেন। বাড়ি কাজে হাত দিলেই থানা পুলিশ এসে বাধা সৃষ্টি করছে। যেখানে আদালতের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, সেখানে গিয়ে পুলিশের বাধা সৃষ্টি করা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, প্রশাসনের ক্ষমতা দেখিয়ে জুলমাত হাবিব আমাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে ও সামাজিকভাবে
অপদস্ত করে জমি দখলের চেষ্টা
করেছে। এতে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি এ বিষয়ে গত ৭-২-২৪ ইং তারিখে পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি। এর আগেও কয়েক দফায় লিখিত অভিযোগ করে কোনো লাভ হয়নি। এবারো আবার অভিযোগ দিয়েছি। আদালতে মামলাও করেছি। মামলার তদন্তে তিনি পুলিশ কমিশনারের অফিসের ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করছেন।
জানা গেছে ২০২১ সালের ২৪ মে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরে টেন্ডার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ঐ ঘটনায় আরএমপির দুটি গ্রুপের টেন্ডার বিক্রি ও সুষ্ঠুভাবে গ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন সদর দপ্তরের প্রশাসন সহকারী জুলমাত হাবিব। বলা হয়ে থাকে ঐদিনের ঘটনায় তিনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। নামে বেনামে তিনি রাজশাহীতে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।
আরএমপি’র একটি সুত্র বলছে, দীর্ঘদিন যাবৎ আরএমপিতে কর্মরত জুলমত হাবিব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুলোতে একক আধিপত্য বিস্তার করে অবৈধ ফায়দা হাসিল করছেন। আরএমপি’র যে কোনো কাজ পেতে তাকে অবৈধ সুবিধা দিতে হয়।
এসব বিষয় জানতে জুলমত হাবিবকে ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে অন্য একটি পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জমিটি বিষয়ে আমার কোনো হস্তক্ষেপ নেই। ওই জমি ভেজাল তাদের দুই বোনের মধ্যে। এ বিষয়ে বহুবার বসা হয়েছে। কোনো শুরাহা হয়নি। বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলর ও থানা পুলিশ জানে।
রাজপাড়া থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, সায়েরা খাতুনের জমির বিষয়টি আমি অবগত। তারা মহামান্য আদালতে একটি মামলা করেছেন। বিষয়টি থানায় তদন্ত দিয়েছে আদালত। আমরা সেটার তদন্ত করছি। আমি যতদুর জানি তারা উভয় পক্ষ আত্নীয়। এখন জমিটি নিয়ে উভয় পক্ষের ঝামেলা চলছে। বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফায় তারা বসেছে। দুপক্ষে সমঝোতা না হওয়ায় সমাধান হচ্ছে না।

Next Post

পানি ও বিদ্যুৎ সংকটে রাজশাহীতে মৎস্যচাষীরা

মঙ্গল মে ২৮ , ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি: মাছ আমাদের প্রাণিজ আমিষের অন্যতম উৎস। কর্মসংস্থান, বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন এবং পুষ্টি সরবরাহে মাছের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। রাজশাহীতে নানা সমস্যায় জড়জড়িত মৎস্যচাষীরা। বিদ্যুৎ সমস্যা, পানির সমস্যাসহ প্রশাসনের অসহযোগিতায় ব্যহত হচ্ছে মৎস্যচাষ। মৎস্যচাষের অব্যাহত অসুবিধায় বিপাকে বড় বড় মৎস্যচাষীরা। এ সমস্যায় মাছ চাষ হুমকির মুখে পড়েছে। এতে মাছের দাম […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links