আবারো হুমকির মুখে চাষীদের জমি।

বাগমারা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারায় আবারো হুমকির মুখে পড়তে চলেছে নরদাশ ও গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের শত শত কৃষকের আবাদী জমি। উপজেলার বেশ কয়েকটি বিলে প্রভাবশালীদের জোরপূর্বক মাছ চাষকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে কয়েক হাজার বিঘা কৃষি জমি অকেজো হয়ে পড়েছে। মাছ চাষের ফলে শত শত কৃষকের আজ নুন আন্তে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা জুড়ে একের পর এক বিলের সরকারী খালগুলো প্রভাবশালীরা দখল করে মাছ চাষ করার ফলে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে সাধারণ কৃষকদের। সরকারী বিভিন্ন অফিসে লিখিত আকারে অভিযোগ দিলেও তা থেকে কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা কৃষকরা। মাছ চাষ নিয়ে বিভিন্ন সময় বিলে সংঘর্ষ বাধে। এরই জের ধরে কিছুদিন আগে নরদাশ ইউনিয়নে এক ব্যক্তিকে জবাই করে হত্যা করা হয়।

এদিকে দীর্ঘদিন থেকে নরদাশ ইউনিয়নের হাতিয়ার বিল এবং কোলার বিলে চারপাশের লোকজন যৌথভাবে শেয়ারের ভিত্তিতে কৃষি জমিতে ধান চাষের পাশাপাশি মাছ চাষ করে আসছে। বিলটিতে বন্যার সময় বন্যা আসলেও তাতে কৃষকের তেমন কোন ক্ষতি হয় না। কারণ ওই দুটি বিল সহ পাশের গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের কইচা বিল, দাইমা বিল এবং হড়ংবিলের পানি কোলার বিলের মাঝখান থেকে চন্ডিপুর গ্রামের ব্রীজের নিচ দিয়ে ২০-২৫ ফিট প্রশস্থ একটি হাতিনার দাঁড়া (পানি নামার জায়গা) আছে যা সরকারী খাস। দাঁড়াটি বিলের মাঝ দিয়ে হাট-মাধনগর ব্রীজের কাছে কম্পো নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। এতে করে বিল দুটিতে পানির সমন্বয় রক্ষা হয়। সেই সাথে ওই খাঁল দিয়েই কয়েকটি বিলের অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন হয়ে থাকে। ফলে বিনা ঝামেলায় কৃষকরা ধান সহ অন্যান্য ফসলের আবাদ করতে পারছে।

বর্তমানে বিলটিকে ঘিরে নরদাশ ইউনিয়নের প্রভাবশালী ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম তার বাহিনী নিয়ে জোর পূর্বক পরিকল্পিত ভাবে শত শত কৃষকের ক্ষতি করে নিজেদের লুকায়তি স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে চন্ডিপুর ব্রীজের কাছে হাতিনার দাঁড়ার উপরে পাকাপোক্ত ভাবে একটি আরসিসি বাঁধ নির্মাণ করে চলেছে। বাঁধটি নির্মাণ করা হলে দুই ইউনিয়নের ৪-৫ টি বিলের ধান চাষ ব্যাহত হবে। এতে অপুরণীয় ক্ষতির মুখে পড়বে কোলার বিল সহ কয়েকটি বিলের হাজার হাজার কৃষক। বাগমারা উপজেলা যেহেতু কৃষি নির্ভর তাই কৃষকের যেন কোন ক্ষতি না হয় সে বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত তা ভেঙ্গে ফেলা প্রয়োজন। এই বাঁধ নির্মাণের ফলে দুটি ইউনিয়নে কৃষিতে বিপর্যয় নেমে আশার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে যে কোন সময় কৃষকের সাথে প্রভাবশালী মৎস্য চাষী ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের লোকজনের মধ্যে রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষের সৃষ্টি হতে পারে।

জনস্বার্থকে বাদ দিয়ে নিজের ইউপি সদস্যকে স্বার্বিক সহযোগিতা করে চলেছেন নরদাশ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন। চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে এ ব্যাপারে তিনি কোন সদোত্তর দেননি। যাতে করে কেউ কোন অভিযোগ না করে সে জন্য অনেককেই হুমকি দিয়ে চলেছে সেই প্রভাবশালী ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম।

এদিকে গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিজন সরকার বলেন, বাঁধটি জরুরী অপসারণ করা দরকার। তা না হলে হাজার হাজার কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এই বাঁধটি অপসারণ করতে ইতোমধ্যেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

বাঁধ নির্মাণ বিষয়ে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, সবকিছু আইন দিয়ে চলে না। সেই সাথে তিনি আরো বলেন, যে ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে সে তো পাগল। পাগল না হলে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে।

কৃষকের স্বার্থে নরদার ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য সেকেন্দার আলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী জাকিউল ইসলাম উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিকট তদন্তের জন্য প্রেরণ করেন।

এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি সরেজমিনে দেখতে হাট-মাধনগর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এদিকে হাট-মাধনগর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার শওকত আলী জানান, আমি সরেজমিনে তদন্ত করে দেখেছি এটি সরকারী দাঁড়া (পানি নিষ্কাশনের জায়গা) এখানে কোন ভাবেই বাঁধ নির্মাণ করতে দেয়া যাবে না।

Next Post

নগরীতে মোটর সাইকেল চুরি।

সোম জুন ১১ , ২০১৮
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাহপুজুর রহমান লোটনের ব্যক্তিগত কার্যালয়ের সামনে থেকে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। রবিবার রাত ১১টার দিকে নগরীর দরিখরবোনা এলাকার বাসিন্দা আনার আলীর হিরো গ্লামার মডেলের মোটরসাইকেলটি ( রাজ-মেট্রো-১২-৩৩৬২) চুরির ঘটনা ঘটে। আনার আলী জানান, তিনি রাত সাড়ে ১০টার দিকে মোটরসাইকেলটি রেখে লোটনের কার্যালয়ে কাজ […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links