নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর আসন্ন দুই পৌরসভা নির্বাচন ২৮ ডিসেম্বর। পুঠিয়া ও কাটাখালী পৌরসভায় প্রথমবারের মতো ভোট হবে ইভিএমে। প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা ছিল তুঙ্গে। ভোট গ্রহণের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়েও প্রার্থীদের মধ্যে সংশয় তৈরি হলেও তা পক্ষপাত তুষ্ট বলছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে পুলিশ বলছেন অন্যকথা, সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি তারা নিয়েছেন। কেউ বিশৃঙ্খলা করলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন তারা।
সোমবার ২৮ ডিসেম্বর সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। পুঠিয়া পৌরসভায় মেয়র পদে আ.লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে রবিউল ইসলাম রবি, বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আল মামুন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নারিকেল গাছ প্রতীকে গোলাম আজম নয়ন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়াও কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন এবং মহিলা কাউন্সিলর পদে ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌর নির্বাচনে ৯টি কেন্দ্রে ১৬ হাজার ৬৩৩জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
২০০২ সালে রাজশাহীর পবা উপজেলার একটি অংশ নিয়ে কাটাখালী পৌরসভা গঠন করা হয়। এর আয়তন ২৫ বর্গকিলোমিটার। ২০১৫ সালের নির্বাচনের আগপর্যন্ত এই পৌরসভার মেয়র ছিলেন জামায়াত নেতা মাজেদুর রহমান। শুরুতে প্রশাসকও ছিলেন তিনি। ২০১৫ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. আব্বাস আলী মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক। এবারও মাজেদুর রহমান প্রার্থী হয়েছেন। সেখানে এই দুজনসহ মেয়র পদে লড়ছেন চারজন। তবে চারজনের মধ্যে ইতিমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু সামা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নৌকা প্রতিকের মেয়র প্রার্থী আব্বাসকে সমর্থন দিয়েছেন।
ভোটকেন্দ্রে স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান পুঠিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জয়নুল আবেদীন এবং পবা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম প্রামাণিক। তারা জানান, ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব, আনছার ভিডিপির সদস্য ছাড়াও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়াও সার্বক্ষণিক ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
জানা গেছে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম অলিখিতভাবে সরে দাঁড়িয়েছেন জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ও দুইবারের সাবেক মেয়র মাজিদুর রহমানের সমর্থনে। ফলে ধানের শীষের কোনো পোস্টারও পড়েনি কাটাখালীতে। বিএনপি নেতাকর্মীরা মাজিদুরের জগ প্রতীকে ভোট চাইছেন।
কাটাখালী পৌরবাসী জানান, কাটাখালীতে বাকি দুই প্রার্থী আওয়ামী লীগের আব্বাস আলী, ও জামায়াত সমর্থিত মাজিদুর রহমান ভোটের মাঠে ঊর্ধ্বমুখে ছুটছেন। এদের মধ্যে আব্বাস আলী বর্তমান মেয়র এবং ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হওয়ায় তার প্রচার-প্রচারণার ঝলক বেশি। জেলা ও পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আব্বাসের পক্ষে ভোট প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। একাধিক ভোটার বলেছেন, আব্বাস তরুন প্রজন্মের আইডল, আছে তরুনদের নিয়ে কাজ করার অদম্য ইচ্ছাশক্তি। ক্ষমতায় থেকে অল্প সময়ে করেছেন পৌরবাসীর মনজয়, লাগিয়েছেন পৌরসভায় উন্নয়নের ছোয়া।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, এই পৌরসভার সব ওয়ার্ডেই চলছে ভোটের আমেজ, তবে বেশি অংশ মানুষ কাজ করছে বর্তমান মেয়র আব্বাস আলীর নৌকা প্রতীকে ।
পুঠিয়া পৌরসভার আ.লীগের মেয়র প্রার্থী রবিউল ইসলাম রবি বলেন, ‘দলীয় নেতাকর্মীরা একসঙ্গে নির্বাচনের কাজ করছি। অন্য যারা প্রার্থিতা করছেন তাদের চেয়ে বেশি জনগণের সমর্থন রয়েছে আমাদের। আশা করছি জনগণ বিপুল ভোটে আমাকে নির্বাচিত করবে।’ বিএনপি’র প্রার্থী আল মামুন বলেন,‘ প্রচার-প্রচারণার কার্যক্রম শেষের দিকে। আশা করছি জনগণের রায় আমাদের দিকেই আসবে।
তবে অন্য মেয়রপ্রার্থীদের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) ইফতে খায়ের আলম জানান, ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।