আইপিল ক্রিকেট কে কেন্দ্র করে জুয়ার আসর জমজমাট হয়ে উঠেছে।

আভা ডেস্কঃ জয়পুরহাটে ভারতীয় অনুষ্ঠিত আইপিল ক্রিকেট কে কেন্দ্র করে জুয়ার আসর জমজমাট হয়ে উঠেছে। এতে জুয়াড়ীরা আবারও সক্রিয় হয়েছে। এলাকার কিছু চিহ্নিত জুয়াড়ীরা আইপিএল ক্রিকেট জুয়ার লোভ দেখিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী, শ্রমিক, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও শিক্ষিত যুবকদের আকৃষ্ট করে তুলছে। আইপিএলসহ বিভিন্ন ক্রিকেট খেলায় জুয়াড়ীদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। প্রতিদিন তারা এই আসরে যোগ দিয়ে খোয়াচ্ছেন মোটা অংকের অর্থ। আর আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হচ্ছেন চিহ্নিত জুয়াচক্র।

টাকা হারিয়ে ব্যবসায়ী, শ্রমিক, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও শিক্ষিত যুবকরা নেশায় আসক্ত হয়ে উঠছে। খোদ প্রশাসনের নাকের ডগায় এরকম অবৈধ কার্যক্রম চলায় তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জেলার সচেতন মহল।

জানা গেছে, জয়পুরহাটের বিভিন্ন হোটেল, চায়ের দোকান, ছাত্রাবাস, গ্রামগঞ্জে, পাড়া-মহল্লায় এমনকি বাসা-বাড়ীতেও এ সব জুয়ার আসর চলছে নিয়মিত। প্রতিদিনের খেলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলে এ আসর। হাজার হাজার টাকা পর্যন্ত এ আসরে জুয়াড়ীরা বাজি ধরছে। তাদের সাথে এলাকার শিক্ষিত বেকার তরুণ, ভ্যান-রিক্সার চালক, ব্যবসায়ী, হোটেল কর্মচারী এমনকি স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও মেতে উঠেছে। প্রতি বছর অনুষ্ঠিত টি-২০, বিভিন্ন দেশের টেস্ট, ওয়ানডে, আইপিএল, বিপিএল, বিগব্যাশ, বিশ্বকাপ আসরসহ নানা খেলায় বাজিকররা রমরমা বাণিজ্য করে আসছে। ক্রিকেটে দলগত হার-জিত বাজির পাশাপাশি চলে আবার প্রতি ওভারে বাজি। এছাড়াও চলে বাই বল, কোন খেলোয়ার কত রান করবে, ওভার প্রতি কয়টি চার হবে, কয়টি ছক্কা বা কত রান হবে, কোন খেলোয়ার ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্ধারিত হবে, কোন দল কত রান করবে, ম্যাচের ক্যাচ ধরা, কোন খেলোয়ার বেশী রান করবে, খেলায় কার সেঞ্চুরী বা হাফ সেঞ্চুরী হবে এরকম আর অনেক কিছুতেই চলে হাজার হাজার টাকার বাজি। সুনাম অর্জন করেছে এমন শক্তিশালী দলের সাথে দূর্বল দলের খেলা থাকলে সে ক্ষেত্রে আবার দেয়া হয় লোভনীয় ডবল অফার। সরাসরি না হলে মোবাইল ফোনেও জুয়ার বাজি ধরা হয়।

কালাই উপজেলার আঁওড়া মহল্লার রফিকুল ইসলাম, আব্দুল বাতেন, ধাপ-কাতাইল গ্রামের রাজমিস্ত্রি রবিউল ইসলাম, কালাই শহরের সেলুন ব্যবসায়ী ভক্ত মিয়া, রতন কুমার ও খোকন, মুলগ্রামের সবুজ মিয়া, পাঁচবিবির পানাইল গ্রামের হারেজ উদ্দিন, ক্ষেতলালের ফুলদিঘী বাজারের আব্দুস সামাদসহ অনেকেই আইপিএলসহ বিভিন্ন ধরনের জুয়া চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে এলাকাবাসী তাদেরকে এক নামে চিনেন। তারা কখনও সরাসরি আবার কখনও মোবাইল ফোনে বাজি ধরেন। তাদের লেনদেন বিশেষ করে বিকাশ একাউন্টে হয়। বাজির টাকা লেনদেনের সময় এসব চতুর জুয়াড়ীরা সংকেত হিসেবে ১০০ টাকাকে ১ টাকা, ৫০০ টাকাকে ৫ টাকা, ১০০০ টাকাকে ১০ টাকায় উল্লেখ্য করেন। হাজার হাজার টাকা বাজি ধরে এ জুয়া খেলছেন।

জয়পুরহাট শহরের বউবাজার, রেল ষ্টেশন, নতুন হাট, পুরানাপৈল বাজার, কালাই উপজেলার থুপসারা, আঁওড়া, পাঁচশিরা, পুনট, ক্ষেতলাল উপজেলার মঞ্জার বাজার, পাঁচবিবি রেল ষ্টেশনসহ বিভিন্ন এলাকায় বর্তমান অনুষ্ঠিত আইপিএল ক্রিকেট খেলা উপলক্ষে জুয়াড়ীরা ঠোট পেতে বসে থাকে। ক্রিকেট জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার রাতে জেলার কালাই পৌর শহরের থুপসারা মহল্লায় এবং আঁওড়া মহল্লাতে দু’গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে।

ওই ঘটনার পর শুক্রবার রাতে কালাই থানার পুলিশ আঁওড়া মহল্লার পূজা মন্ডব এলাকায় বেশ কয়েকটি চায়ের দোকানে জুয়ারীদের আড্ডায় হানা দিয়েছে। তবে কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। জুয়াড়ীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে যে যার মত পালিয়েছে। এসব খেলায় বাজি ধরে হেরে গিয়ে অনেক স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার জুয়াড়ীরাও সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হতে বসেছে। কেউ কেউ সুদের টাকা নিয়ে চালাচ্ছে এ জুয়ার আসর। এসব কারণে বাড়ছে তাদের পরিবারে অশান্তি।

স্থানীয় প্রশাসনের নিকট অভিভাব মহলের আবেদন, জায়গা চিহ্নিত করে জুয়াড়ীদের আড্ডায় হানা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছেন।

জয়পুরহাট শহরের বাসিন্দা আনিছুর রহমান বলেন, এসব জুয়াতে বাজি ধরে হেরে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থী নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। দ্রুত জুয়াড়ীদের আড্ডায় হানা না দিলে দিন দিন আরও বেশী আসর জমে উঠবে।
পাঁচবিবি উপজেলার চানপাড়া এলাকার মাসুদ রানা বলেন, প্রতিদিনই তাদের লোভে পড়ে প্রায় ৩ হাজার টাকা খুইয়েছি। আজ পর্যন্ত কোনটাতেই জিততে পারিনি।

কালাই উপজেলার আঁওড়া মহল্লার সোহেল রানা বলেন, ক্রিকেট খেলার মধ্যে জুয়ার আসর বসে এর আগে শুনেছি বটে, কিন্তু বিশ্বাস করিনি। বৃহস্পতিবার রাতে যখন খেলার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়, তখন থেকে মনে হচ্ছে জুয়ার আসর ভালই জমে উঠেছে। তাইতো পুলিশ শুক্রবার রাতে পুজা মন্ডব এলাকায় কয়েকটি চায়ের দোকানে হানা দিয়েছে।

কালাই থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল লতিফ খান বলেন, জুয়ার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে থুপসা।

সিল্কসিটি

Next Post

রাজশাহীতে আরও দুটি সরকারি স্কুল নতুনভাবে স্থাপন করা হবে। এ বছরের মধ্যেই, জানালেন এম পি বাদশা।

মঙ্গল এপ্রিল ৯ , ২০১৯
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে আরও দুটি সরকারি স্কুল নতুনভাবে স্থাপন করা হবে। এ বছরের মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে স্কুল দুটি স্থাপনের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ। এ ব্যাপারে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। সোমবার বিকেলে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে আলাপকালে রাজশাহী-২ আসনের এই সংসদ […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links