অবরোধের মাধ্যমে আরব আমিরাতের সাধারণ মানুষের অধিকার লঙ্ঘন করছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

আভা ডেস্ক :কাতারের ওপর আরোপিত অবরোধের নিয়ে সংযুক্তরা আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছে আন্তর্জাতিক আদালত। অবরোধের মাধ্যমে আরব আমিরাতের সাধারণ মানুষের অধিকার লঙ্ঘন করছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

কাতারের পক্ষ থেকে হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার এ রুল জারি করেছেন ওই আদালতের এক বিচারক। খবর আল জাজিরার।

২০১৭ সারের জুন মাসে সৌদি আরবের নেতৃত্বে আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিসর কাতারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করে। অবরোধের পর এক বছর পার হলেও দুই পক্ষের কেউই নিজেদের অবস্থান থেকে সরেনি।

অবরোধের এক বছর, টাকা আর গরু বাঁচিয়েছে কাতারকে (যুগান্তর: ০৬ জুন ২০১৮)

মরুভূমির মধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এক গোয়ালঘরে একটির পর একটি গরু তোলা হচ্ছে মেশিনে দুধ দোয়ানোর জন্য। এক বছর আগে কাতারে কোনো ডেইরি শিল্প ছিল না।

দুগ্ধজাত পণ্যের জন্য দেশটি পুরোপুরি সৌদি আরবের ওপর নির্ভরশীল ছিল।

এখন বালাদনা ফার্মে ১০ হাজার গরু আছে, যাদের বেশিরভাগই এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ভালো জাতের গাভীর থেকে।

এক বছর আগে সৌদি আরবের নেতৃত্বে গালফ দেশগুলো কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার এক মাস পর কাতার এয়ারওয়েজে করে প্রথম গরুটি আনা হয়েছিল দেশে।

সেই বয়কটের কারণে ছোট্ট দেশটি সেই সময় বেশ বড় সংকটে পড়েছিল।

এর পরই দেশটি সিদ্ধান্ত নেয় স্বনির্ভর হওয়ার। ফার্মের মালিক পিটার ওয়েল্টেভরেডেন বলেছিলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল- এক বছরের মধ্যে আমরা ফ্রেশ দুধে নিজেরা স্বাবলম্বী হব। সবাই বলেছিল এটি হবে না, কিন্তু আমরা করে দেখিয়েছি।

গত বছর ৫ জুন সৌদি আরব, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, আর মিসর কাতারের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং পরিবহন সংযোগ ছিন্ন করে।

কাতারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে মদদ দেয়ার অভিযোগ আনে দেশগুলো। কাতার সে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে। প্রতিবেশী আরব দেশগুলোর সম্পর্ক ছিন্ন করাকে কাতার নিজের সার্বভৌমত্বের প্রতি একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখে।

নিজেদের বিপুল খনিজসম্পদ গ্যাস বিক্রির পয়সা কাজে লাগিয়ে কীভাবে সংকট দূর করা যায়, সে চেষ্টা চালিয়ে যায়।

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি বলেছেন, যারা অবরোধ দিয়েছে আমাদের ওপর, তারা ক্ষমতা প্রদর্শন করতে চেয়েছিল। তাদের চেয়ে যারাই আলাদা, তাদেরই সন্ত্রাসী হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে তারা।

পুরনো শত্রুতা এই সংকট শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালের ২৪ মে কাতারের সরকারি বার্তা সংস্থা কিউএনএর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ থেকে যাতে বলা হয় কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ইসলামপন্থী গ্রুপ হামাস, হেজবুল্লাহ ও মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রশংসা করে বক্তব্য দিয়েছেন। আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশি দিন টিকবেন না।

কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংকটের শিকড় আরও গভীরে প্রোথিত। ওয়াশিংটনভিত্তিক অ্যারাবিয়া ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আলি শিহাবি জানিয়েছেন, কুড়ি বছর ধরে চাপা থাকা একটি বিষয় এই বিরোধের মূল কারণ।

২০১১ সালে লিবীয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর প্রকাশিত এক টেপে দেখা যায়, কাতারের বর্তমান আমিরের বাবা সৌদি রাজপরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।

শিহাবি বলছেন, কাতার অন্য আরব দেশগুলোতে থাকা বিদ্রোহীদের অর্থ না দেয়ার একটি চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয় এবং আলজাজিরাতে তাদের বক্তব্য প্রচারের সুযোগ করে দেয়।

তিনি বলেন, এটি অনেকটি ছোট ভাই বড় ভাইদের সঙ্গে লড়তে যাওয়া। সে তো সবসময় উল্টো ফল দেবে, আর সমস্যা বাড়াবে।

ইরানের দিকে ঝুঁকে পড়া বর্তমানে চারদিকে স্থলসীমায় অবরোধ থেকে পরিত্রাণের উপায় খুঁজছে কাতার।

এরই মধ্যে দেশটি ৭০০ কোটি ডলার খরচ করে গালফ উপকূলে নতুন একটি বন্দর খুলেছে। এর মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা কিছুটা হলেও সামাল দিচ্ছে দেশটি।

এই বন্দর দিয়ে এখন ২০২২ সালে বিশ্বকাপ ফুটবল স্টেডিয়াম বানানোর নির্মাণসামগ্রী আসছে।

সাম্প্রতিক সময়ে কাতার ইরানের সঙ্গে উপকূলবর্তী একটি সীমান্ত এবং সবচেয়ে বড় গ্যাসফিল্ডে ভাগাভাগি করছে।

কাতারের বিমান এখন ইরানের আকাশসীমা ব্যবহার করছে।

আর শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবকে সমর্থন দিলেও সম্প্রতি ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার জন্য উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর ঐক্যের কথা বলছে। এ ছাড়া কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বড় বিমানঘাঁটি রয়েছে।

দেশপ্রেমিক উদাসীনতা দেশটির ঐতিহাসিক বাজার সৌক ওয়াকিফে সাধারণ কাতারিরা অপেক্ষা করছে, কবে এই অবরোধ শেষ হবে।

একজন বলছিলেন, উপসাগরীয় দেশগুলোর বন্ধন অচ্ছেদ্য। এই ব্যক্তির স্ত্রী সৌদি আরবের নাগরিক এবং তার মা রিয়াদে থাকেন। অবরোধের কারণে তিনি পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না। তিনি খুবই বিরক্ত।

তবে ভিন্নমতও আছে। বাজারে ছোট ছোট শিশুরা তরুণ আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির ছবিসংবলিত বেলুন নিয়ে ছোটাছুটি করছিল।

গাড়ির জন্য বানানো স্টিকার, মগ, টিশার্টে এবং বড় বড় ভবনে আমিরের ছবি দেখে বোঝা যায় তিনি বেশ জনপ্রিয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছিলেন, তারা আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন। সূত্র : বিবিসি বাংলা।

Next Post

‘আলোচনার অগ্রগতিতে আমি খুশি। আমাদের কোনো তাড়া নেই।’

মঙ্গল জুলাই ২৪ , ২০১৮
আভা ডেস্ক : ১৯৫০ সালে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের করা অস্ত্রবিরতি চুক্তিটি স্থায়ীভাবে শান্তিচুক্তিতে রুপান্তর করে সম্পূর্ণরূপে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং কিম জং উন সরকারকে ক্ষমতায় রাখার নিশ্চয়তা চান কিম জং উন। এ ধরনের কোনো নিশ্চয়তা না পেলে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ আলোচনা আর চালিয়ে যেতে চান না তিনি। উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links