আভা ডেস্ক: দেশের ১৭ জেলায় তেল গ্যাস অনুসন্ধানে ২য় মাত্রার ভূকম্পন জরিপ করছে রাষ্ট্রীয় তেল গ্যাস উত্তোলন অনুসন্ধান কোম্পানি (বাপেক্স)। বাপেক্স জানায়, দীর্ঘদিন ধরে দেশের তেল গ্যাস অনুসন্ধানে এক ধরনের স্থবিরতা কাটিয়ে তিন হাজার লাইন কিলোমিটার এলাকায় অনুসন্ধান চালানো হবে। দেশের পূর্বাঞ্চালের মতো দক্ষিণের জেলাগুলোয়ও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও অনুসন্ধানের বাইরে রয়ে গেছে।
পেট্রেবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মো. ফয়েজউল্লাহ-এনডিসি সম্প্রতি এক চিঠিতে জ্বালানি বিভাগের কাছে সংশ্লিষ্ট অন্য মন্ত্রণালয়ের সহায়তা চেয়েছেন। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ জেলায় তেল গ্যাস অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
ভূতাত্ত্বিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, অনুসন্ধান কাজ আরও আগে শুরু করা উচিত ছিল কিন্তু তা করা হয়নি। দেরিতে হলেও এই উদ্যোগ ভালো।’ তিনি বলেন, ‘দেশের সব জায়গাতেই গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এর মধ্যে দেশের সিলেট অঞ্চলে গ্যাস পাওয়ার উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে। এখন দেখে যাচ্ছে বরিশাল অঞ্চলের মধ্যে ভোলা, বরিশাল ও শরীয়তপুরে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
বাপেক্সের একজন কর্মর্কতা জানান, ১৭ জেলার মধ্যে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, রাজবাড়ি, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, মাদারিপুর, গোপালগঞ্জ, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা ও বাগেরহাটে গ্যাস অনুসন্ধান চালানো হবে।
এরমধ্যে ভোলায় গ্যাস রয়েছে। ভোলায় বিপুল গ্যাসের মজুদ থাকায় পাশের জেলাগুলোয়ও গ্যাস থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া খুলনা অঞ্চলে ব্লক-৭-এ সুন্দরবনের মধ্যে তেল গ্যাস অনুসন্ধান চালায় শেভরন। কিন্তু শেভরন তখন ওই এলাকার গ্যাসকে অর্থনৈতিভাবে লাভজনক নয় উল্লেখ করে তুলতে সম্মত হয়নি। তবে সেখানে গ্যাসের মজুদ রয়েছে বলে কোম্পানিটি জানিয়েছিল।
এ বিষয়ে অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, ‘ব্লক-৭-এ বাগেরহাটে একটি টাইট স্যান্ড-এর মধ্যে গ্যাস রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে কূপখনন করলে ওই গ্যাস উঠবে না। আগে স্যান্ডটি ফাটাতে হবে তারপর গ্যাস উঠবে। হয়তো শেভরনের জন্য এটা লাভজনক হবে না। কিন্তু আমাদের জন্য তো লাভজনক হবে।’ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘শেভরন বড় আকারের গ্যাসক্ষেত্র ছাড়া কূপখনন করে না। কিন্তু বাপেক্স তো ছোট ছোট খনিতেও কূপ খনন করে গ্যাস তুলেছে।’
প্রসঙ্গত, বর্তমানে দেশের গড়ে গ্যাস উৎপাদনের পরিমান দুই হাজার ৭০০মিলিয়ন ঘনফুট। চাহিদা এর থেকে আরও এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট বেশি। ঘাটতি মেটাতে সম্প্রতি এলএনজি আমদানি করছে সরকার।
উৎস
বাংলা ট্রিবিউন