আভা ডেস্কঃ সুরমা-কুশিয়ারাসহ সিলেটের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি এখনও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এখনও প্লাবিত রয়েছে নিম্নাঞ্চল।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) থেকে বুধবার (১৭ জুলাই) নদীগুলোর পানি কিছুটা কমেছে। অবশ্য কিছুটা বেড়েছে সারি নদীর পানি।
সিলেট পানি উন্নয়ন রোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ১৩ দশমিক ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহমান ছিল। বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫ সেন্টিমিটার কমে ১৩ দশমিক ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা এখনও বিপদসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার ওপরে।
সুরমা নদী সিলেট পয়েন্টে আগের দিন ১০ দশমিক ৭৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বুধবার ৭ সেন্টিমিটার কমে ১০ দশমিক ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরপরও বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহমান।
জকিগঞ্জের অমলশীদ পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি আগেরদিন ১৬ দশমিক ০৮ সেন্টিমিটার ছিল। বুধবার সকালে ২৫ সেন্টিমিটার কমে ১৫ দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এখনও বিপদসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহমান রয়েছে এই নদীর পানি।
কুশিয়ারা নদীর পানি সিলেটের বিয়ানীবাজার শেওলা পয়েন্টে মঙ্গলবার গতিপ্রবাহ ছিল ১৩ দশমিক ৪০। আজ তা ১৬ সেন্টিমিটার কমে ১৩ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখনও বিপদসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এই নদীর পানি।
মৌলভীভাজারের শেরপুর পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি অপরিবর্তিত থেকে ৮ দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহমান। যা এখনও বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপরে।
সিলেটের জৈন্তাপুরে পাহাড়ি নদী সারি মঙ্গলবার ১০ দশমিক ৪২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বুধবার তা ৩২ সেন্টিমিটার বেড়ে ১০ দশমিক ৭৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিপদসীমার ১ দশমিক ০১ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।
এছাড়া কানাইঘাটের লোভাছড়ার পানি আগেরদিন ১৪ দশমিক ৬২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত ছিল। আজ তা ২০ সেন্টিমিটার কমে ১৪ দশমিক ৪২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহমান।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশা এ তথ্য জানিয়ে বলেন, সিলেটের নদ-নদীর পানি প্রতি ঘণ্টায় কমে আসছে। বৃষ্টি কম হওয়ায় পানিও কমে আসছে।
এদিকে, পানি কমতে শুরু করায় পানিবাহী রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। ফলে বন্যাকবলিত সিলেটের ১৩টি উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা দিতে ১৪০টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে, জানান ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মীর মাহবুবুর রহমান।
বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আগেরদিন মঙ্গলবার তিনি সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। একয়দিনে ১৩ উপজেলায় বন্যা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়িয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।
সিলেটের সিভিল সার্জন হিমাংশু লাল রায় বলেন, সিলেটে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও মানুষের রোগাক্রান্ত হওয়ার প্রভাব নেই। এটা স্বস্তিদায়ক। তারপরও ১৩ উপজেলার ১৪০টি ইউনিয়নে একটি করে মেডিক্যাল টিম কাজ করছে।
প্রতি উপজেলায় স্থাপন করা হয়েছে কন্ট্রোলরুম। প্রান্তিক পর্যায়ে অসুস্থ ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিক সেবা দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বাংলা নিউজ