সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।মেসি

নাইজিরিয়া আমাদের সামনে একটা সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। সেই সুযোগের সম্পূর্ণ ফায়দা তুলতে হবে। মঙ্গলবারের ম্যাচ আর্জেন্টিনার সিনিয়রদের কাছে অগ্নিপরীক্ষা।

তবে আবার পরক্ষণেই বলতে ইচ্ছে করছে যে, এখান থেকে প্রত্যেকটি ম্যাচই তো অগ্নিপরীক্ষা। গ্রুপ পর্বেই তো আমরা জীবন-মরণ খেলায় মেতে উঠেছি। যে-হেতু এ রকম একটা শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, আমার মনে হয়, সিনিয়রদের উপর আস্থা দেখানোই ভাল। দু’জন অনুজ খেলোয়াড়ের কথা আমি বলব। পাভন আর আরমানি। এই দু’জনকে রেখে বাকি দল গঠনে অভিজ্ঞতাকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

গোলে যেমন ফ্রাঙ্কো আরমানিকে অবশ্যই খেলানো উচিত। আগের ম্যাচে ও রকম একটা ভুলের পরে কাবালেরোকে নামিয়ে ঝুঁকি নেওয়া ঠিক হবে না। ওকে এখন বিশ্রাম দিলেই ভাল। আরমানিই এই মুহূর্তে সেরা বিকল্প। রিভারপ্লেটের হয়ে ও যে রকম খেলে, সেটা যদি দেশের জার্সিতে দেখাতে পারে, তা হলে কিন্তু আরমানি মোটেও খারাপ বিকল্প হবে না। আমি এখনও অবাক হচ্ছি দেখে যে, পাভনকে খুব বেশি সময় খেলানো হয়নি। নাইজিরিয়ার বিরুদ্ধে শুরু থেকে যদি ওকে খেলানো হয়, মনে হয় না কেউ সাম্পাওলির খুব সমালোচনা করবে। আমার মনে হচ্ছে, মেজা, আকুনা বা দিবালাকে এই মুহূর্তে খেলানো উচিত বলে। আর্জেন্টিনার হয়ে অন্তত ৬০টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন খেলোয়াড়দেরই এই ম্যাচে লাগবে। দি মারিয়া, মাসচেরানো, বানেগা, আগুয়েরো, মেসি আর হিগুয়াইনের মতো অভিজ্ঞদের উপরেই আস্থা রাখতে হবে কোচ সাম্পাওলিকে।

এই ম্যাচের জন্য আমি রক্ষণে মার্কাডো, ওটামেন্ডি, ফাজিও এবং রোহোকে দেখতে চাই। কেন এই চার সেন্ট্রাল ব্যাককে চাইছি? কারণ, সবার প্রথমে এই দলটার পাসিং গেমটা ঠিক করতে হবে। আর্জেন্টিনা কর্নার বা ফ্রি-কিক পেলে প্রতিপক্ষ একেবারেই আতঙ্কিত হচ্ছে না। দলটার মধ্যে তাগিদেরও অভাব রয়েছে। এই চার সেন্ট্রাল ব্যাক থাকলে পিছন থেকে ধাক্কাটা দেওয়া যাবে বাকিদের। মাঝখানে পাভন, বানেগা, মাসচেরানো আর দি মারিয়াকে চাই আমি। উপরে মেসি এবং হিগুয়াইন। অন্য কোনও দলের উপর ভরসা না রেখে আর্জেন্টিনাকে যদি নক-আউট পর্বে যাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখতে হয়, তা হলে ভাল ব্যবধানে নাইজিরিয়াকে হারাতে হবে। কিন্তু মনে রাখা দরকার, এটা আমাদের শেষ ম্যাচও হয়ে থাকতে পারে এ বারের বিশ্বকাপে। যে দলের চতুর্দিকে ফাটল রয়েছে, তাদের নিয়ে সব সময় আশা-নিরাশার দোলা তো থাকবেই।

আমার মনে হয়, এত বেশি ফুটোফাটা নিয়ে আর্জেন্টিনাকে রক্ষণও খুব মজবুত করতে হবে। নিজেদের বিশালতা থেকে সরে আসতে হবে আমাদের। বাস্তবসম্মত ভাবে ভাবতে হবে। মাটিতে পা রেখে ভাবতে হবে যে, আমরা দুর্ধর্ষ কোনও দল নই। অন্য অনেকের চেয়ে খারাপ। তাই সেটা মাথায় রেখেই আমাদের দল আর রণনীতি ঠিক করা উচিত। সাম্পাওলিকে সবার আগে নিজের ফুটবলারদের মধ্যে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে। সেটা সহজ কাজ নয়।

যদি আমরা এই অগ্নিপরীক্ষায় পাশ করতে পারি, তখন অনেক কিছু বদলে যেতে পারে। দলের মধ্যে ফুরফুরে মেজাজ ফিরে আসতে পারে, বিশ্বাস ফিরতে পারে, মনোভাব আমূল পাল্টে যেতে পারে। কিন্তু আমার মতে, যদি শেষ ষোলোতে আমরা উঠতেও পারি, নিজেদের ক্ষমতা অনুযায়ী খেলা উচিত। যেমন ফ্রান্সের মতো দলের সামনে পড়লে রক্ষণ সামলে তবেই আক্রমণে যাওয়া ভাল। আর্জেন্টিনার এই দলের যা শক্তি, কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর খেলাই ওদের জন্য সব চেয়ে মানানসই। কিন্তু শেষ ষোলো নিয়ে না হয় পরে ভাবা যাবে। আপাতত প্রথম কাজ হচ্ছে, ঐতিহাসিক কিছু ফুটবলার নিয়ে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া। না হলে ঐতিহাসিক ফুটবলারদের নিয়েও আর্জেন্টিনার ইতিহাসে সব চেয়ে লজ্জাজনক বিশ্বকাপ হয়ে থাকবে রাশিয়ায়।

তাই লিয়োনেল মেসির উদ্দেশে বলতে চাই— লিয়ো, এটাই সম্ভবত বিশ্বকাপে তোমার শেষ সুযোগ। গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দাও, কে সেরা! আর্জেন্টিনা তোমার গোল দেখেনি অনেক দিন। এই ম্যাচে গোল করো আর দেশকে জেতাও।

অন্যদের বলব, সকলে জেগে ওঠো। নিজেদের উপর বিশ্বাস রেখে, সর্বস্ব উজাড় করে দিতে ঝাঁপিয়ে পড়ো। নিজেদের প্রমাণ করো। মনে রেখো, লজ্জা বাঁচানোর শেষ সুযোগ মঙ্গলবার!

Next Post

অবহেলায় প্রসুতির মৃত্যু, হাসপাতালে ঘীরে বিক্ষোভ।

মঙ্গল জুন ২৬ , ২০১৮
আভা ডেস্ক: গর্ভের শিশু-সহ অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল মধ্য কলকাতার লেডি ডাফরিন ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে। স্বপ্না হেলা (৩৫) নামে বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বাসিন্দা ওই মহিলার মৃত্যুর পরই তাঁর পরিজনরা হাসপাতালে চিকিৎসকদের ঘিরে তুমুল বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের অভিযোগ, প্রসবযন্ত্রণা শুরু হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে আসার পর প্রায় দেড় ঘণ্টা অন্তঃসত্ত্বাকে […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links