সিলেট, কুড়িগ্রাম, সুনামগঞ্জ ও জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে।

আভা ডেস্ক :সিলেট, কুড়িগ্রাম, সুনামগঞ্জ ও জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে। এতে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
এসব এলাকায় পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও মাছের খামার। শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ওঠায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ক্ষেতের ফসল ও গোখাদ্য হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক।
লালমনিরহাট ও জামালপুরে ব্রিজের সংযোগ সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কুড়িগ্রামে বাঁধ ভেঙে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এদিকে সিলেটের গোয়াইনঘাটে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ যুবকের লাশ শুক্রবার উদ্ধার করা হয়েছে।

যুগান্তর ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

কুড়িগ্রাম, নাগেশ্বরী ও রাজারহাট : ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমারসহ প্রধান নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব নদীর অববাহিকায় ২৫টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫০ হাজার পরিবার।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার হলোখানার সারোডোব এলাকায় মেরামত করা একটি বাঁধ ভেঙে ৪টি ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দুধকুমার নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভূরুঙ্গামারী ও নাগেশ্বরী উপজেলার ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে নাগেশ্বরীতে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি দু’কূল ছাপিয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। রাজারহাটে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় চরাঞ্চলের ২ হাজারেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম আতঙ্কে রয়েছেন।

সিলেট : গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। এসব এলাকায় শাকসবজি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাটের পাশাপাশি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ প্রায় অর্ধশত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ১০টি বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে পানি ওঠায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে। পাহাড়ি ঢলে প্রায় ৩শ’ হেক্টর জমির ফসল ও বীজতলা নিমজ্জিত হয়েছে। পানিবন্দি লোকজন চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় কদমতলা এলাকায় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ যুবক আবদুর রশিদের লাশ শুক্রবার উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত রশিদ পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের মাতুরতল (ইসলামাবাদ) গ্রামের ইরফান আলীর ছেলে।

সুনামগঞ্জ, ছাতক ও দোয়ারাবাজার : শুক্রবার সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ছাতক সদর, কালারুকা, চরমহল্লা, ভাতগাঁও, উত্তর খুরমা, দক্ষিণ খুরমা, সিংচাপইড়, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও, ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নসহ আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

এসব এলাকার দুই লক্ষাধিক মানুষ দু’দিন ধরে পানিবন্দি। কয়েকটি স্টোন ক্র্যাশার মিল, পোলট্রি ফার্ম, মৎস্য খামার ও শাক-সবজির বাগানেও বন্যার পানি ঢুকেছে। গ্রামীণ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় অধিকাংশ এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ঢোকায় শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় শুক্রবার পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো ত্রাণ দেয়া হয়নি।

এদিন উপজেলার সৈদাবাদ ও বৈশাকান্দি গ্রামের বন্যাদুর্গতদের মাঝে মসজিদ কাউন্সিল মানিকগঞ্জের উদ্যোগে ত্রাণ দেয়া হয়।

লালমনিরহাট : বৃহস্পতিবার রাতে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার প্রায় ১১ সেমি. ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলে চার উপজেলায় ৫ সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েন। বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে গেছে হাতীবান্ধার দক্ষিণ সিন্দুর্ণা এলাকার একটি ব্রিজের সংযোগ সড়ক।

এতে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তবে শুক্রবার সকাল থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করে। বেলা ৩টার দিকে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপদসীমার প্রায় ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।

ইসলামপুর (জামালপুর) : যমুনা তীরবর্তী ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার নিুাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। ইসলামপুর উপজেলার ডেবরাইপ্যাচ এলাকায় ব্রিজের সংযোগ সড়ক ধসে গেছে। দক্ষিণ চিনাডুলী গ্রামের সিরাজ বেপারি, তোতা বেপারি, শাহাজাদা বেপারি, রেজাউল করিম ও লালমিয়ার বসতভিটা ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে।

উপজেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া চিনাডুলী এসএন উচ্চ বিদ্যালয়, চিনাডুলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চিনাডুলী দেওয়ানপাড়া দাখিল মাদ্রাসা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে পানি ৩৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।

ডিমলা (নীলফামারী) : ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ২০টি চর গ্রামে বৃহস্পতিবার হাঁটু থেকে কোমর পানি থাকলেও শুক্রবার দুপুরের পর তা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। ঝুনাগাছ চাপানি ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, শুক্রবার ৮টি পরিবারের বসতঘর ভাঙনের হুমকির মুখে পড়ায় তাদের নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে।

গঙ্গাচড়া (রংপুর) : বৃহস্পতিবার রাত থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে চরসহ নিুাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধিতে সৃষ্ট বন্যায় ছয় হাজার ৫০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
যুগান্তর

Next Post

বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকে বিদায়।

শনি জুলাই ৭ , ২০১৮
আভা ডেস্ক : বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকে বিদায়। আর্জেন্টিনা, জার্মানি, স্পেনের পর বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলো ব্রাজিল। বাংলাদেশে তুলনামূলক বেশি সমর্থক আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের। সেই দিক থেকে বললে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ উন্মাদনা শেষ। জার্মানি গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরে যায় বিশ্বচ্যাম্পিয়ণ জার্মানি। দুই হার ও এক জয়ে তিন […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links