রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) ভিসির মেয়াদ গত মাসে শেষ হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত নতুন উপাচার্য নিয়োগ দেয়নি আচার্য। এখনও শূন্য আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি শীর্ষ ও প্রধান পদ। শীর্ষ পদ দু‘টি শূন্য থাকার ফলে প্রশাসনিক কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আর্থিক অনুমোদন ও নানা ধরনের আবেদন পত্রে স্বাক্ষরসহ প্রশাসনিক কাজগুলোও ভিসি না থাকায় আটকে আছে।
তাছাড়া প্রায় চার বছর ধরেই প্রো-ভিসির পদটিও শূন্য রয়েছে। যার ফলে শীর্ষ দু’টি পদ ফাকা থাকায় এক ধরনের স্থবিরতার মধ্যে চলছে প্রশাসনিক কার্যক্রম।
এদিকে শীর্ষ এই পদগুলোতে কাউকে নিয়োগ না দেওয়ায় বিভিন্ন মহলে দেখা দিয়েছে সংশয়। এমনকি কবে এ দু‘টি পদে নিয়োগ দেওয়া হবে তাও কেউ বলতে পারছেন না। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, রুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কাজে ব্যাঘাতসহ অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ভূমিকা পালন করেন উপাচার্য। এই পদে যদি কেউ না থাকে তাহলে নানা ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। বিশেষ করে বর্তমানে ক্যাম্পাসের ভেতর ছাত্রলীগের দলীয় কোন্দল ও বহিরাগতদের নৈরাজ্য প্রকট আকার ধারণ করেছে। গত কয়েকমাসে রুয়েটে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষ, আধিপত্য বিস্তার এমনকি ক্যাম্পাসের ভিতরে খুন হয়েছে। যার ফলে যে কোন সময় সংঘর্ষ হতে পারে বলে আংশঙ্কা করছেন রুয়েটের কয়েকজন শিক্ষক। তাই ক্যাম্পাসে অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটে যাওয়ার আগেই তাঁরা যোগ্য কাউকে নিয়োগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৮ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ উপাচার্য হিসেবে যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোহা রফিকুল আলম বেগকে চার বছরের জন্য নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি । কিন্তু গত এক মাস আগে তার মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন করে কাউকে নিয়োগ দেননি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য।
তাছাড়া, ২০১০ সালের ১২ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি ও আচার্য ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক বিভাগের অধ্যাপক ড. মর্ত্তুজা আলীকে প্রো-ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেন। ২০১৪ সালের ১১ অক্টোবর প্রো-ভিসির মেয়াদকাল শেষ হয়। তার মেয়াদকাল শেষ হলেও এখন নিয়োগ হয়নি নতুন প্রো-ভিসি। ফলে প্রতিনিয়ত নানা প্রশাসনিক জটিলতা ও বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা বিঘ্ন ঘটছে।
রুয়েটের রেজিস্ট্রার দফতর সূত্রে জানা যায়, ভিসি না থাকায় ইতোমধ্যে স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা প্রশাসনিক কার্যক্রম। বিভিন্ন কাজে আর্থিক অনুমোদন ও নানা ধরনের আবেদনপত্রে স্বাক্ষরসহ প্রশাসনিক কাজগুলো ভিসি ছাড়া কেউ করতে পারেন না। তাই এক ধরনের স্থবিরতার মধ্যে রয়েছে প্রশাসনিক কার্যক্রম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রশাসনিক বিভিন্ন কাজের জন্য ভিসি অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু ভিসি না থাকায় কোন কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক কাজ আংশিক করার পর অনুমোদনের জন্য আটকে আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মনে করেন, ভিসি পদে দলীয় পরিচয়কে বিবেচনা না করে সৎ. নীতিবান, মেধাবী ও যোগ্য ব্যক্তিকেই যেন নিয়োগ দেয়া হয়। যিনি রুয়েটের প্রশাসনিক, একাডেমিক, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষার মান উন্নয়নসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করবেন।