নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী বিভাগে ৫৮ জনকে অর্থ পাচারকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্পেশাল ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট শাখা থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি রেঞ্জ ডিআইজি, নগর পুলিশ কমিশনারের কাছে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও সেই তালিকাটি পাঠানো হয়েছে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার সুজায়েত ইসলাম হুন্ডি ব্যবসায়ীদের এমন একটি তালিকা পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী ওই তালিকা ধরে কাজ চলছে।
গোপনীয় ওই তালিকা অনুযায়ী রাজশাহীর পুঠিয়ার মাইপাড়ার মো. সুমন, চারঘাটের ইউসুফপুরের আবদুর রাজ্জাক, নুরুল ইসলাম ও মাইনুল ইসলাম মালু, পিরোজপুরের আলতাব হোসেন, রাজশাহী মহানগরীর কুমারপাড়ার নুপুর সাহা, আবদুল গাফফার, আলুপট্টির মাহন কুমার, সাহেব বাজার এলাকার অশোক রাম, ফুদকিপাড়ার রনক ও নুপুর, গুড়িপাড়ার শফিকুল ইসলাম, মোল্লাপাড়ার মাহবুল ল্যাংড়া হুন্ডি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এখানে মুদ্রা পাচারে জড়িত সিন্ডিকেটের হোতা হিসাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রানীহাটি এলাকার তোজাম্মেল হক ও নগরীর রাজপাড়া থানা এলাকার মুকুল হোসেনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
পাবনা জেলার তালিকায় নাম আছে নিমতলীর অনুপ কুমার, গোপালপুরের শ্যামল ঘোষ, শালগাড়ীয়া গোডাউন মোড়ের বাবলু সাহা, দাসপাড়ার সুশান্ত দাস গোবরা, দিলালপুরের উত্তম কুন্ডু, রামচন্দ্রপুরের কামরুল ইসলাম ও ইয়াসিন আলী, দোলবেদীতলার কমল কান্ত রায়, স্বর্ণপট্টির কিশোর রায় কর্মকার।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের তালিকায় আছে কানসাট বাজারের আবু তালেব, প্রফেসরপাড়ার রফিকুল ইসলাম ওরফে চাইনিজ রফিক, কাঁঠাল বাগিচা এলাকার মো. মিন্টু, পিটিআই মাস্টার পাড়ার মো. আনারুল, স্কুল-কলেজ রোডের গোলাম জাকারিয়া ভদ্র, বটতলা হাট এলাকার সাইফুল ইসলাম, পারচৌকা এলাকার মো. সাজু ও আশরাফুল ইসলাম। এখানে মুদ্রা পাচারে জড়িত সিন্ডিকেটের হোতা হিসাবে হাউস নগরের একরামুল হক, চৌকার মো. ফিরোজ, বাগডাঙ্গার টিপু সুলতান ও মাঝপাড়ার রুহুল আমিনের নাম আছে।
নওগাঁ জেলার তালিকায় হুন্ডি ব্যবসায়ী হিসেবে নাম আছে তাজের মোড়ের পরিতোষ সাহা, কাপড়পট্টির প্রদীপ কুমার আগরওয়ালা ও নারায়ণ চন্দ্র, তুলাপট্টির গোপাল চন্দ্র সাহা, মেইন রোডের গৌর গোপালা সাহা ও দিবাকর রায়, পার নওগাঁর মনোরঞ্জন পাল আলুপট্টি, সোনা পট্টির নিশিকান্ত দাস। এখানে হোতা হিসেবে নাম আছে সুপারী পট্টির আজাদ হোসেনের।
জয়পুরহাট জেলার হুন্ডি ব্যবসায়ী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে মন্দির রোডের সুদর্শন কুন্ডু, পশ্চিম উচনার আবদুর রহমান ও আবদুল কুদ্দুস, চেচড়ার মিজানুর রহমান, মো. মোর্শেদ ও ইয়ারুল জোয়াদ্দার, ভুইডোবার মনতাজ উদ্দিন। এখানে মুদ্রা পাচার সিন্ডিকেটের হোতা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে চেচড়ার রাশিদুল ইসলাম, আবদুল মালেক ওরফে ফাঁটা বাবু, দমদমার আবুল হোসেনকে।
ওই ৫৮ জনের নাম উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান ও নজরদারি রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পুলিশ সদর দফতর থেকে। এছাড়া ১৭ প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হয়েছে মুদ্রা পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে। বিভিন্ন ব্যবসার নামে তারা দীর্ঘদিন ধরে অর্থ পাচার করে আসছেন বলেও প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত হুন্ডি ব্যবসায়ীদের ওই তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও পাঠানো হয়েছে। নগর পুলিশের মুখপাত্র সহকারী কমিশনার ইফতেখায়ের আলম জানান, তালিকা পাঠিয়ে পুলিশ সদর দফতর থেকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া ছক অনুযায়ী কিছু তথ্য পাওয়া হয়েছিল। তারা সেই তথ্য পাঠিয়ে দিয়েছেন।