প্রতারণা চক্রের ধর্ষণ মামলায় ফেঁসে গেলেন ৬ যুবক

রূকাইয়া চৌধুরী:  রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল কলোনির কানার মোড়ের এক ভয়ানক প্রতারণা চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে।। এলাকাবাসী ওই প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। চক্রের মূল হোতা রকি ও তার বোন লাকি আক্তার । পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা তাদের পেশা। টাকা দিয়ে প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে দেহ ব্যবসা, হয়রানি মূলক মামলা, ধর্ষণ মামলা ও বিভিন্ন টাকাওয়ালা ব্যক্তিকে টার্গেট করাই তাদের কাজ। টার্গেট ব্যক্তিকে রকি তার বউ অথবা বোনকে দিয়ে ফাঁসিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেন তারা। এমনকি রকি ও তার ভাই একাধিক মেয়েকে বিয়েসহ তাদের নির্যাতন করেন বলেও অভিযোগ আছে। মেয়ের পরিবার থেকে যেকোনো কৌশলে টাকা নেওয়ায় এদের কাজ । এবার এই প্রতারক চক্রের জালে ধর্ষণ মামলায় ফেঁসে গেছে শিরোইল কলোনির ৬ যুবক। মামলার সাথে ঘটনার মিল নেই মর্মেও অভিযোগ এলাকাবাসীর। এমনকি ভুক্তভোগীরা ঘটনার দিন রাজশাহীর বাহিরে ছিলেন। এলাকার কেউ ঘটনা না দেখলেও প্রতারক চক্রের সদস্যরাই ঘটনার সাক্ষী হয় মামলায়।

শিরোইল কলোনির পশ্চিম পাড়ার শতাধিক এলাকা বাসী বলেন, রকি ও তার বোন লাকি আক্তার রাজশাহীর চন্ডীমা থানা ম্যানেজ করে নিজেদের বাসায় দেহ ব্যবসা করেন। আর এরা বিভিন্ন টাকা ওয়ালা ব্যক্তিকে টার্গেট করে ফেসবুক, ইমো অথবা হোয়াটসঅ্যাপে প্রেমের জাল বিছায়। তারপর তাদের ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আত্মসাৎ করেন। টাকা আত্মসাতের পরেও তারা থেমে থাকে না আবারো তাকে পুলিশ দ্বারা হয়রানি করে অথবা ধর্ষণ মামলা দিয়ে আবারো তাদের প্রতারণা চক্রের জালে ফাঁসিয়ে ফেলে। রকি তার প্রথম বউকে নির্যাতন করে , ব্ল্যাকমেইল করে তার পরিবার থেকে অনেক টাকা আত্মসাৎ করেছেন। মেয়ের পরিবার তার মেয়েকে বাসায় ফিরিয়ে নিয়ে ডিভোর্স দিলে তার পরিবারকে মামলা দিয়ে পুলিশ দ্বারা হয়রানি করিয়েছেন।

এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, রকি এবার আমাদের এলাকার পারভেজের বউ প্রিয়াকে টার্গেট করে তাকে মেসেজ ও কল দেওয়া শুরু করে সে যেন পারভেজকে ছেড়ে তার সাথে বিয়ে করে। এরপর রকি তার দ্বিতীয় বউ রিয়াকে দিয়ে পারভেজ কে কল করিয়ে বলেন আপনার বউ প্রিয়া আমার হাজবেন্ডের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছে নিজের বউকে সামাল দেন। পারভেজ ঘটনা জানতে পেরে তার বউ প্রিয়াকে জিজ্ঞাস করলে জানতে পারে রকি তাকে ফোর্স করে যেন সে এই সংসার ছেড়ে তার সাথে সংসারে লিপ্ত হয়। এরপর পারভেজ রকিকে ফোন দিয়ে ডাক দেয় চলতি মাসের ৩ তারিখে দেখা করার জন্য। রকি আসার পর পারভেজ আর রকি তর্কাতর্কির এক সময় পারভেজ ও তার কিছু এলাকাবাসী রকির উপরে ক্ষিপ্ত হয়ে রকিকে ধাক্কাধাক্কি চর থাপ্পড় দিয়ে সাবধান হয়ে যেতে বলে।

তারপর রকি তার কিছু ভাড়া করা বাহিনী নিয়ে রাস্তায় পারভেজের ভাইয়ের ছেলে তিয়াসকে পেলে তাকে বেধর মারপিট করে মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত করে দেয় । এ বিষয়ে ৩ -৫-২০০৪ তারিখে পারভেজের ভাবি চন্ডিমা থানায় একটি মামলা করেন আনুমানিক রাত ১১ টায়। রকি ও তার নোংরা পরিবারের সাথে পেরে উঠবে না বলে তারা আইনের আশ্রয় নিয়ে থেমে যায়। কিন্তু রকি ও তার বউ রিয়া সেখানে থেমে থাকে নাই পরদিন ৪ তারিখে রাজশাহী কোটে রিয়া মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামী করা হয় পারভেজ, রুহুল, হাসিব, ইসলাম, তিয়াস, জুবায়েরকে। পরে ওই মামলায় ভুক্তভোগীরা পুলিশ কতৃক নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে এলাকায় নানা অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে। তারা নানা সময় সাধারণ মানুষজনকে হয়রানি করতেও মামলা হামলা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে এলাকাবাসী গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে সাক্ষাৎকার দেন। এসময় তারা তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি জানান।

রকির প্রথম বৌয়ের মা ইতি জানান, আমি কোন মতে আমার মেয়ের জীবন বাঁচিয়ে ওই নোংরা পরিবার থেকে বের করে নিয়ে এসেছি। আমার মেয়েকে প্রেমের জালে ফেলে বিয়ে করার পর নির্যাতনের শেষ রাখেনি রকি। কথায় কথায় টাকা চাওয়া, কোন কাজ না করে শুধু নেশা করে আর প্রতারণা করে চলে রকি ও তার বোন লাকি। লাকি একটু সুন্দর হওয়ায় বিভিন্ন ছেলেকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে দুই ভাইবোন মিলে টাকা আত্মসাৎ করে। ব্যবসার নামে আমাদের থেকে ৮-১০ লাখ টাকা নিয়েছে তারা। টাকা দিয়েও আমার মেয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বাধ্য হয়ে আমরা আমাদের মেয়েকে ফেরত নিয়ে আসি। মেয়ে ফেরত আসার পর ভেবেছিলাম বেঁচে গেছি কিন্তু এই রকি আর তার বোন লাকি আমাদের নামে ছয়টি মামলা দিয়ে হয়রানি করছেই।। পুলিশকে টাকা খাইয়ে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে দিচ্ছেন আমাদের। এখনো আমাদের নামে মামলা চলমান রয়েছে।

এবিষয়ে কথা বলতে রকি ও লাকিকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তারা ফোন রিসিভ করেননি। ফোন রিসিভ না করায় সরেজমিনে তাদের খোঁজ নিতে গেলেও তাদের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি। এ কারণে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ধর্ষণের শিকার নারী ও মামলার বাদী রিয়া বলেন, ধর্ষণের ঘটনা সঠিক, তারা (আসামীরা) আগে যে মামলা আমাদের বিরুদ্ধে করেছে সেটা মিথ্যা।

কথা বললে চন্দ্রিমা থানার ওসি মাহবুব আলম বলেন, মামলাটি বিজ্ঞ আদালতে হয়েছে। আমরা সেটার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।

Next Post

মোহনপুরে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মাঝে ঋণ বিতরণ

সোম মে ২০ , ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি: মোহনপুরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মাঝে ঋণ ও চারা গাছ বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২০ মে) দুপুর ১২ থেকে এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মাঝে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠান উপজেলা অডিটোরিয়াম রুমে আরম্ভ হয়ে প্রায় দুপুর ১ টা পর্যন্ত চলে। মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়শা সিদ্দিকার সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথি […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links