নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার আসন্ন উপ-নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন মঙ্গলবার মেয়র পদে ২ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। মনোনয়নপত্র দাখিলকারীরা হলেন, রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মোঃ আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী ও তাহেরপুর পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আলো খন্দকারের মেয়ে খন্দকার শায়লা পারভীন ও তার ছোটভাই তানভীর ইসলাম ফেরদৌস।
যাচাইবাছাই শেষে বোনের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হলে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন বলে জানিয়েছেন ছোট ভাই। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন তারা দু’জনই মনোয়নপত্র জমা দেন। ভাই তানভীর ইসলাম ফেরদৌস মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলে খন্দকার শায়লা পারভীন বিনাপ্রতিদ্ব›দ্বীতায় মেয়র নির্বাচিত হবেন। এদিকে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন চারজন। এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রইস উদ্দিন মৃত্যুর পর পদটি শুন্য ছিল।
আগামী ৯ মার্চ তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র ও এক কাউন্সিলর পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাচাই-বাছাই ১৬ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রত্যাহার করা যাবে ২২ ফেব্রয়ারি পর্যন্ত।
সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন। তিনি পদত্যাগ করে এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর ফলে মেয়র পদটি শূন্য হয়।মঙ্গলবার বিকেলে খন্দকার শায়লা পারভীন দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে এসে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ড. পিএম সফিকুল ইসলাম, জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারওয়ার আবুল, তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আবু বাক্কার মৃধা মুনসুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক প্রভাষক মাহাবুর রহমান বিপ্লব, রাবি’র সমাজ কল্যাণ বিভাগের শিক্ষক ড. জান্নাতুল ফেরদৌস, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কোহিনুর বেগম ও যুগ্ম সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন।
খন্দকার শায়লা পারভীন এর আগে ২০০৩ সালে উপ-নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার বাবা আওয়ামী লীগের নেতা ও পৌরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান আলো খন্দকার চরমপন্থীদের হামলায় নিহত হওয়ার পর উপ-নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি নির্বাচিত হন।
খন্দকার শায়লা পারভীন বলেন, তিনি ২০০৩ সালে প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এবার মেয়রের পদটি শূন্য হওয়ার পর দলীয় নেতা-কর্মী ছাড়াও এলাকার লোকজনের চাপ তার ওপর বাড়ছিল। প্রতিদিন তারা বাড়িতে এসে নির্বাচন করার জন্য অনুরোধ করছিলেন। অনেকে বলেছেন, তার বাবার হাতে গড়া পৌরসভার নেতৃত্ব অন্য কারও হাতে না দিতে। তারাই (দলীয়) মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন। আগের মতোই লোকজনের পাশে থেকে সেবা, বর্তমান সরকার ও সংসদ সদস্যের সহায়তায় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবেন বলে জানান।
বোনের বিপক্ষে নিজের প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে তানভীর ইসলাম ফেরদৌস জানান, তিনি মূলত বড় বোনের সমর্থনে প্রার্থী হয়েছেন। তাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। যাচাই–বাছাইয়ে কোনো কারণে বোন বাদ পড়লে তিনি প্রার্থী থাকবেন। বড় বোন টিকে গেলে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন।
পৌরসভার বিভিন্ন পেশার লোকজন ও দলীয় নেতা-কর্মী খন্দকায় শায়লা পারভীনকেই মেয়র হিসেবে চাইছেন বলে দাবি সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের। তিনি বলেন, শায়লা পারভীনের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলো খন্দকার এই পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি পৌরসভার উন্নয়নে সব ধরনের সহায়তা করবেন।
তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র বাবুল খাঁন জানান, পৌরসভাসহ এলাকাবাসী খন্দকার শায়লা পারভীনকেই চাইছেন। কারণ, পৌরসভা পরিচালনা করার তার যথেষ্ট অভিজ্ঞতাও রয়েছে। এছাড়া তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে।