আভা ডেস্ক: স্বাধীনতার পর তিনিই প্রথম অর্থমন্ত্রী, যিনি টানা ১০ বার বাজেট দেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই সফল হয়েছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। ১ হাজার ৬০০ ডলার ছাড়িয়েছে মাথাপিছু জাতীয় আয়। কয়েক বছর ধরে প্রবৃদ্ধিও হচ্ছে ৭ শতাংশের উপরে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে অভিগমনের প্রাথমিক যোগ্যতাও এরই মধ্যে অর্জিত হয়েছে।
এসব সাফল্যের মধ্যে নানা ব্যর্থতাও স্পর্শ করেছে অর্থমন্ত্রীকে। আর্থিক খাতের অবস্থা ভালো রাখতে পারেননি তিনি। আস্থা ফেরেনি পুঁজিবাজারেও। সড়কে চলতে আগের চেয়ে খারাপ অভিজ্ঞতায় পড়তে হচ্ছে মানুষকে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য অবকাঠামোর উন্নয়নও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হয়নি। গুণগত তেমন পরিবর্তন আসেনি শ্রমবাজারেও।
যদিও গত ১০ বছরে বাজেটের আকার প্রায় পাঁচ গুণে উন্নীত করেছেন অর্থমন্ত্রী। তবে গতি আসেনি বাস্তবায়ন হারে। বছর সাতেক আগেও বাজেট বাস্তবায়নের হার ছিল ৯৭ শতাংশ। ধারাবাহিকভাবে কমতে কমতে তা ৭৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। বাজেট বাস্তবায়নের এ শ্লথগতি হতাশ করেছে অর্থমন্ত্রীকে। মাঝেমধ্যে তিনি ক্ষুব্ধও হয়েছেন। কিছুদিন আগেও সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাছে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেট বাস্তবায়নের হার ক্রমান্বয়ে কমে ৮০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। এটা খুবই অপ্রত্যাশিত। একই সঙ্গে দুঃখজনক। সরকারের জন্য এটা চ্যালেঞ্জ। এসব মেনেই চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট পেশ করতে যাচ্ছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। টানা দশমবারের মতো আজ পেশ করতে যাওয়া এ বাজেটের সম্ভাব্য আকার ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা।
আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল মাল আবদুল মুহিত প্রথম বাজেট পেশ করেন ২০০৯-১০ অর্থবছর। ওই বাজেটের আকার ছিল ১ লাখ কোটি টাকার কিছু বেশি। নয় বছরের ব্যবধানে বাজেটের আকার প্রায় পাঁচ গুণে উন্নীত করতে যাচ্ছেন তিনি। বাজেটের আকার নিয়ে অর্থমন্ত্রী যতটা উচ্ছ্বসিত, বাস্তবায়নে ততটাই হতাশ। কারণ পরিসংখ্যানই বলছে, বাজেট বাস্তবায়নের হার ধারাবাহিকভাবে কমছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১০-১১ অর্থবছর ঘোষিত ১ লাখ ৩২ হাজার ১৭০ কোটি টাকার বাজেটের ৯৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছিল। ওই অর্থবছরে প্রকৃত ব্যয় হয় ১ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা। এর পরই এ সরকারের প্রথম মেয়াদের তৃতীয় বছরের বাজেটের আকার বেড়ে হয় ১ লাখ ৬৩ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যয় হয় ১ লাখ ৫২ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ বাস্তবায়ন হয় বাজেটের ৯৩ শতাংশ। ২০১২-১৩ অর্থবছর উন্নয়ন-অনুন্নয়ন মোট ১ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। এর মধ্যে ব্যয় হয় ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা বা মোট বাজেটের ৯১ শতাংশ। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ২ লাখ ২২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকার মধ্যে ১ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। পরের অর্থবছর ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকার মূল বাজেটের মধ্যে ব্যয় করা সম্ভব হয় ২ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকা। এ দুই অর্থবছর বাজেট বাস্তবায়নের হার ছিল যথাক্রমে ৮২ দশমিক ৪৩ ও ৮০ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। ২০১৫-১৬ অর্থবছর আবুল মাল আবদুল মুহিত ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন সংসদে। শেষ পর্যন্ত অর্থবছরটিতে প্রকৃত ব্যয় হয় ২ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। এ হিসাবে ২০১৫-১৬ অর্থবছর বাস্তবায়ন হয় বাজেটের ৭৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছর অর্থমন্ত্রী বাজেট ঘোষণা করেন ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার। ওই অর্থবছর বাজেটের ৭৩ শতাংশের মতো বাস্তবায়ন হয়। সর্বশেষ চলতি অর্থবছর ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেটের মধ্যে প্রথম আট মাসে বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ৩৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ। যদিও শেষ পর্যন্ত ৯০ শতাংশের কাছাকাছি বাস্তবায়ন হবে বলে আশা করছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত।
দেশের অর্থনীতির সক্ষমতার তুলনায় বাজেট অতিমাত্রায় উচ্চাভিলাষী হওয়ার কারণেই বাস্তবায়নের হার কমছে বলে মনে করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, প্রশাসনের দক্ষতা ও সচেতনতার অভাব বাজেট বাস্তবায়নের হারকে পিছিয়ে দিয়েছে। এডিপি বাস্তবায়ন না হওয়ার পাশাপাশি সক্ষমতার তুলনায় এনবিআরের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা বেশি নির্ধারণ এবং বছর শেষে তা কমিয়ে আনাও বাস্তবায়ন হার কম হওয়ার কারণ।
আগের ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছরও সংশোধন করা হয়েছে বাজেটের আকার। ২৮ হাজার ৭৭১ কোটি টাকা কমিয়ে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটের সংশোধিত আকার ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা। এ থেকে ২৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িয়ে আগামী অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বড় বাজেট দিতে যাচ্ছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাজেটে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মোট আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। আয় কাঠামোর মধ্যে রাজস্ব খাত থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে কর রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৫ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা ও করবহির্ভূত ৩৩ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানোর পাশাপাশি ঋণনির্ভরতাও বাড়ছে এবারের বাজেটে। ঘাটতি বাজেটের অর্থসংস্থানে ঋণের দিকে ঝুঁকছে সরকার।
করের বোঝা বাড়ছেই: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে আগামী অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্রত্যক্ষ কর বা আয়কর রাজস্ব আহরণের মূল ক্ষেত্র হলেও বাংলাদেশে আগামী অর্থবছরে পরোক্ষ কর থেকেই প্রায় ৬৫ শতাংশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে। আয়কর থেকে এনবিআর আহরণ করে রাজস্বের মাত্র ৩৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ। খাতভিত্তিক রাজস্ব আহরণে সর্বোচ্চ ৩৭ শতাংশ বা ১ লাখ ১০ হাজার টাকা আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ভ্যাট থেকে। আয়কর, ভ্রমণ কর ও মুনাফা কর থেকে ১ লাখ ২ হাজার কোটি ও আমদানি-রফতানি পর্যায়ের শুল্ক থেকে ৮৪ হাজার কোটি টাকা আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ছাড় ও করারোপের বহুস্তর ভ্যাট: ২০১৯ সাল থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর করার আগে আগামী অর্থবছর থেকেই দুই স্তরের ভ্যাট চালুর কথা বলা হলেও তা হচ্ছে না। তবে ভ্যাটের স্তর কমে পাঁচটিতে নেমে যাচ্ছে এবারের বাজেটেই। বিদ্যমান দেড় শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত মোট নয়টি স্ল্যাব থেকে কমিয়ে পাঁচটি স্ল্যাব করা হচ্ছে। আগামী অর্থবছর থেকে ভ্যাটের হার হচ্ছে ২, ৫, সাড়ে ৭, ১০ ও ১৫ শতাংশ। ব্যবসা শুরুর আগেই আদায়কৃত অগ্রিম ভ্যাট (এটিভি) ১ শতাংশ বাড়িয়ে ৪-৫ শতাংশে উন্নীত করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয় শিল্পকে সুবিধা দিতে পণ্য ও সেবায় কিছু ক্ষেত্রে ভ্যাট আরোপ ও কিছু ক্ষেত্রে অব্যাহতি থাকছে আসছে বাজেটে। নতুন করে ই-কমার্স সেবায় ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের কথা রয়েছে। এছাড়া ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হচ্ছে বীমা কোম্পানির এজেন্ট কমিশন সেবা, স্থানীয়ভাবে মোবাইল, গাড়ি, মোটরসাইকেল, রেফ্রিজারেটর উৎপাদনে। আগের মতোই ভ্যাটমুক্ত থাকছে চাল, ডাল, সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় এক হাজারের মতো পণ্য ও সেবার ওপর।
অপরিবর্তিত সম্পূরক শুল্ক: রাজস্ব আহরণ, স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা দেয়া ও আমদানি নিরুৎসাহিত করতে বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করা হয়। বর্তমানে ভিত্তিমূল্যের ওপর পণ্যভেদে ৫ থেকে ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত হারে এ শুল্ক আরোপিত রয়েছে। মানুষের ব্যবহার উপযোগিতা ও ব্যবসার কথা চিন্তা করে প্রতি বছরই এ তালিকায় বড় ধরনের কাটছাঁট করে এনবিআর। তবে এবারের বাজেটে অল্প কয়েকটি পণ্য ছাড়া বড় কোনো পরিবর্তন আসছে না সম্পূরক শুল্ক কাঠামোয়। আগামী অর্থবছরে আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ে ১ হাজার ৪০০-এর মতো পণ্যে সম্পূরক শুল্ক বহাল থাকছে। নতুন করে গ্রিন টি আমদানি ও হেলিকপ্টার সেবায় ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। সম্পূরক শুল্ক বাড়ছে বিড়ি ও সিগারেটের মতো জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর উপাদানেও। মদ-জাতীয় পণ্য বিপণনেও বাড়ানো হচ্ছে সম্পূরক শুল্ক।
ভ্যাট অনলাইন ও প্যাকেজ ভ্যাট: নতুন আইন বাস্তবায়ন হলে প্যাকেজ ভ্যাট উঠে যাবে। ২০১৯ সালে ভ্যাট আইনটি বাস্তবায়নের আগে এবারই ভ্যাট কাঠামো অনলাইনে হলেও বহাল থাকছে প্যাকেজ ভ্যাট। বছরে ৮০ লাখ টাকার কম টার্নওভার হওয়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে আদায় করা প্যাকেজ ভ্যাটের হারও আগের মতোই থাকছে। শহরভেদে একজন ব্যবসায়ীর সর্বনিম্ন পৌনে ২ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত টার্নওভারের ওপর সর্বোচ্চ ২৮ হাজার ও সর্বনিম্ন ৭ হাজার টাকা করেই এ ভ্যাট আদায় করা হবে। তবে ১ জুলাই থেকে ভ্যাটের সব প্রক্রিয়া অনলাইনের মাধ্যমে শুরু হবে। এ লক্ষ্যে নতুন করে বিধিমালা প্রণয়ন ও প্রযুক্তিগত আপগ্রেডেশন শেষ করেছে এনবিআর। অনলাইনে ভ্যাট দিতে আগামী অর্থবছর থেকে ব্যবসায়ীদেরও ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) ব্যবহার করতে হবে।
এক বছর পেছাচ্ছে শুল্ক আইন: ১৯৬৯ সালের আইনটির বদলে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে নতুন কাস্টমস আইন প্রণয়নে ২০১২ সালে কাজ শুরু করে এনবিআর। আগামী অর্থবছর থেকে আইনটি কার্যকর করার কথা থাকলেও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির অভাবে এবার তা পারছে না সংস্থাটি। আইনটি বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং পর্যায়ে রয়েছে। এরপর মন্ত্রিপরিষদে পাস হলে ভ্যাটের মতোই ২০১৯ সাল থেকে তা কার্যকরের নতুন পরিকল্পনা রয়েছে। নতুন আইনটিতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে শুল্কায়ন ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হয়েছে। যেমন ইকোনমিক অথরাইজড অপারেটর, ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো, পোস্ট অডিট ক্লিয়ারেন্স, অগ্রিম বিল অব এন্ট্রি দাখিল, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়গুলো রাখা হয়েছে। এ আইন হলে সৎ ব্যবসায়ীরা সহজে পণ্য খালাস করতে পারবেন। নতুন আইনের অপেক্ষায় শুল্কক্ষেত্রে আগামী বাজেটে খুব একটা পরিবর্তনও আনছে না এনবিআর। তবে ইলেকট্রিক গাড়ি আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা আসতে পারে এবারের বাজেটে।
আয়করে নির্বাচনের প্রভাব: ভ্যাটে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আয়করে নতুন করে করের বোঝা চাপছে না জনগণের ওপর। করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে কর প্রদানের হারে কিছুটা পরিবর্তন এনে স্বস্তি দেয়া হতে পারে। বর্তমানে শূন্য, ১০, ১৫, ২০, ২৫ ও ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হয়। সেক্ষেত্রে ৫ কিংবা সাড়ে ৭ শতাংশ হারে আরেকটি করস্তর থাকতে পারে। করমুক্ত আয়সীমা ২ লাখ ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব রয়েছে। করপোরেট করের ক্ষেত্রে সব খাতে কমানোর চাপ থাকলেও শেষ পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে তা কমতে পারে। তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর করপোরেট কর ৪০ থেকে কমে ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ হতে পারে। কোম্পানির লভ্যাংশে বহুস্তর কর নিয়েও সুস্পষ্ট ঘোষণা থাকতে পারে এবারের বাজেটে। এছাড়া ফেসবুক, ইউটিউব ও গুগলের মতো সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপনের ওপর করারোপ নিয়েও ঘোষণা থাকতে পারে।
১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মসূচি: আগামী অর্থবছরের জন্য ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬৬১ কোটি টাকার উন্নয়ন বরাদ্দ দিতে যাচ্ছে সরকার। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে, যা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) আওতায় থাকবে। বাকিটা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন প্রকল্প। সার্বিকভাবে চলতি অর্থবছরের চেয়ে আগামী অর্থবছর এ খাতে ২৪ হাজার কোটি টাকা বেশি বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে নির্বাচন সামনে রেখে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো সরকারের অগ্রাধিকারের ১০টি প্রকল্পে আগামী অর্থবছরে ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আর পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেলের জন্য রাখা হয়েছে যথাক্রমে ৪ হাজার ৩৯৫ কোটি ও ৩ হাজার ৯০২ কোটি টাকা। নতুন এডিপির ২৬ শতাংশ বা সাড়ে ৪৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে পরিবহন খাতে।