আওয়ামী লীগের আগামী জাতীয় কাউন্সিলে রাসিক মেয়র লিটনকে প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভূক্তির দাবি উত্তরাঞ্চলের মানুষের ।

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ একদিকে নজরকাড়া নগর উন্নয়ন অন্যদিকে উত্তরাঞ্চলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ভীত দৃঢ় করতে প্রাণপন প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সন্তান রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। আপদমস্তক আওয়ামী লীগার খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে এখন সুদৃঢ় ও সু-সংগঠিত উত্তরের আওয়ামী লীগ। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আগামী জাতীয় কাউন্সিলে লিটনকে প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভূক্তির দাবি উঠেছে বিভাগীয় শহর রাজশাহী ছাড়াও উত্তরাঞ্চলের আওয়ামী লীগের তৃণমূল থেকে।

এক সময়ের বিএনপির ঘাটি তছনছ করে ২০০৮ সালে লিটন আওয়ামী লীগের প্রথম রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর পট পরিবর্তন হয় উত্তরের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। সিটি নির্বাচন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধারাবাহিকতায় সব আসন দখলে আসে আওয়ামী লীগের। মূলত: লিটনের বিজয়ের সুবাতাশ প্রবাহিত হয় উত্তরাঞ্চলের সবগুলো সংসদীয় আসনে। সর্বশেষ দ্বিতীয় মেয়াদে রাসিকের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এ অঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভীত আরো শক্তিশালী হয়ে উঠে লিটনের নেতৃত্বে।

দ্বিতীয় মেয়াদের মাত্র এক বছরেই আবারো রাজশাহী নগরের নজরকাড়া উন্নয়নযজ্ঞ চলমান তার নেতৃত্বে। সড়ক অবকাঠামোর পাশাপাশি ঢাকা ও চট্টগ্রামের পর দেশের তৃতীয় মহানগরী যেখানে তৈরি হচ্ছে ফ্লাইওভার। নগরীতে আধুনিক পয়ঃনিষ্কাশন ও বিদ্যুৎ অবকাঠামো নির্মাণও শেষ পর্যায়ে। নগরবাসী বলছেন, এসব উন্নয়নের রূপকার মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের দক্ষতা ও সৌন্দর্যপ্রিয়তার ছোঁয়ায় রাজশাহী ক্রমান্বয়ে হয়ে উঠছে তিলোত্তমা নগরী।

জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ কামরুজ্জামানের সন্তান ও তার যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষের আস্থা ও ভরসার প্রতীকও হয়ে উঠেছেন তিনি। রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলে দলের নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে, আওয়ামী লীগের আসন্ন কাউন্সিলে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পাক লিটন। তাকে নেয়া হোক দলের প্রেসিডিয়ামে। দলের জাতীয় নেতৃত্বে বড় রদবদলের খবরের পরিপ্রেক্ষিতে উত্তরাঞ্চলের নেতাকর্মীরা এ দাবি জোরালো করেছেন। লিটন বর্তমানে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য।

দলীয় সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে, দ্বিতীয় দফায় বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের রাজনৈতিক গুরুত্ব বেড়েছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাও বেড়েছে তার ওপর। ইতিমধ্যেই তাকে দেয়া হয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক দায়িত্ব। সম্প্রতি রাজশাহী বিভাগের বগুড়া, নাটোর, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কাউন্সিলের সমন্বয়ক করা হয়েছে লিটনকে। এসব কাউন্সিল তার নেতৃত্বেই সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারা বলেন, শহীদ কামরুজ্জামানের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবেই শুধু নয়, খায়রুজ্জামান লিটন উত্তরাঞ্চলে দলের রাজনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে নিরলসভাবে শ্রম দিচ্ছেন। তিনি ত্যাগী নেতাকর্মীদের সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় করে নতুন করে দায়িত্ব দিচ্ছেন। এতে গতি পেয়েছে বিভিন্ন জেলা, উপজেলা থেকে সব তৃণমূল সংগঠন।

রাজশাহী-৫ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল সাহেবের মৃত্যুর পর উত্তরাঞ্চলে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যে শূন্যতা ও ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছে, তা পূরণ করতে পারেন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তাকে দলের আসন্ন কাউন্সিলে দলের প্রেসিডিয়ামে নেয়ার যে দাবি উত্তরাঞ্চলের নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে উঠেছে তা আগামী দিনে দলের জন্য আশীর্বাদ হবে।

এদিকে আসন্ন কাউন্সিলে দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের কোনো পদ প্রত্যাশা করেন কিনা জানতে চাইলে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে দায়িত্ব দেবেন সেটাই নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে যে কোনো পর্যায়ের নেতৃত্বের জন্য দল থেকে তাকে দায়িত্ব দেয়া হবে। সেই দায়িত্ব তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবেন বলে জানান।

মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, ‘আমাদের একটাই চাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন আরো দীর্ঘদিন সুস্থ্য থাকেন, ভালো থাকেন। তিনি কীভাবে প্রতিটি মুর্হূতে দেশ, জাতি, রাষ্ট্রের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, কিভাবে প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক সীমানায় পৌছে যাচ্ছে তা থেকে আমাদের শিক্ষাগ্রহণ করতে হবে।’ মেয়র লিটন বলেন, ‘গুণগত ও শিক্ষার দিক থেকে রাজশাহীসহ উত্তরের আওয়ামী লীগ অনেক সু-সংগঠিত।

প্রসঙ্গত, এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহী জেলার কাদিরগঞ্জে এক বিখ্যাত রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা এএইচএম কামারুজ্জামান এবং মাতার নাম জাহানারা বেগম। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে লিটন চতুর্থ এবং ভাইদের মধ্যে সবচেয়ে বড়। বংশগত ভাবে লিটনের পরিবার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তার বাবা এএইচএম কামারুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং যুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

লিটনের দাদা আবদুল হামিদ মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং দীর্ঘদিন রাজশাহী অঞ্চলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান আইন সভার সদস্য (এমএলএ) হিসেবেও দায়িত্ব¡ পালন করেন। আব্দুল হামিদের পিতার নাম হাজ্বী লাল মোহাম্মাদ। রাজশাহী গলুই এর জমিদার হাজ্বী লাল মোহাম্মদ কংগ্রেসের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি রাজশাহী থেকে পর পর দুবার লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের (এমএলসি) সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি রাজশাহী এসোসিয়েশন ও বরেন্দ্র একাডেমীর একমাত্র মুসলিম সদস্য ছিলেন।

লিটনের বড় মেয়ে ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি এবং রাজশাহী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক। লিটনের স্ত্রী শাহীন আখতার রেনী রাজশাহীর মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। রাজনৈতিব বিচেক্ষনাতায় বর্তমানে তিনি রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্বের পাশাপাশি সামাজিকভাবে মানুষের পাশে থেকে সেবা করে যাচ্ছেন।

 

Next Post

সাংবাদিক শেলুকে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে দু্ই পা ভেঙ্গে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা, আটক-১ ।

শুক্র ডিসে. ২০ , ২০১৯
জামালপুর প্রতিনিধিঃ জামালপুরের দৈনিক পল্লীকন্ঠ প্রতিদিনের স্টাফ রিপোর্টার সাংবাদিক শেলু আকন্দের উপর হামলা চালিয়ে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে দু্ই পা  ভেঙ্গে দিয়েছে ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১১টায় শহরের দেওয়ানপাড়া এলাকায় পুরাতন এসডিওর বাড়ির পিছনে শহরের বাইপাস রোডে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত শেলু আকন্দকে স্বজন […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links